প্রতীকী ছবি
কল্পবিজ্ঞানের কোনও যন্ত্র-দেশে আটকে পড়েছেন যেন। জনমানবের দেখা নেই। সময় চলছে অতি মন্থর। এক-দু’বার বন্ধ দরজার সামনে এসে বিদঘুটে নলের মতো তিন ফুটের রোবট এসে ফোন করছে, “সার্ভিস রোবট। আপনার অর্ডার নিয়ে।”
দরজা খুললে রোবটের পেটে ডালা খুলে যায়। হাত বাড়িয়ে নিতে হয় জলের বোতল বা খাবার। বেজিংয়ে স্বাভাবিক জনজীবন ফিরছে। খুলেছে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানও। তবে কোয়রান্টিন বা আইসোলেশন মানে এখনও এমনটাই। বিদেশ থেকে কিংবা সংক্রমণের আঁতুড় হুবেই প্রদেশ থেকে এসেছেন যাঁরা, বেজিংয়ে তাঁদের দিন কাটছে এ ভাবেই। বহুতলের প্রতি তলায় এক জন শুধু টেবিল পেতে বসে। লিফটে উপর-নীচে ঘোরাঘুরি ও সব কাজই করছে রোবট। দিনে এক বার নভশ্চরদের মতো হ্যাজ়মাট পরে ডাক্তার এসে দেখেন। পইপই করে বলে যান, বেরোবন না। পরিজন কেউ খাবার দিতে এলে, নীচতলায় ডেস্কের পাশে রেখে দেন। কোনও কর্মী তা রেখে আসেন ঘরের দরজায়। তিনি সরে গেলে তুলে নিতে হয় তা। কোথাও আবার বাছবিচার পছন্দের বালাই নেই। যা দিচ্ছে, খেতে হচ্ছে।
দিনের পর দিন মানুষের মুখ না-দেখে হাঁপিয়ে উঠেছেন সকলে। সংবাদমাধ্যমের কর্মী বছর পঁচিশের সিয়ে চুং উহান থেকে ফিরে ইস্তক আইসোলেশনে। বললেন, “তিন সপ্তাহ ধরে এক জন মানুষেরও মুখ দেখিনি। মনে হচ্ছে, সময়টা চলছে যেন খুবই ধীর গতিতে।” উহান-ফেরত জার্মান সাংবাদিক ফ্রেডারিকো ভেগা দ্বিতীয় দফায় কোয়রান্টনে রয়েছেন। এই মহিলার কথায়, “দরজার সামনেই ক্যামেরা। রীতিমতো আতঙ্কের।” মার্চের শেষে চিনে এসেই ঘরবন্দি হন ফরাসি শিক্ষিকা শার্লৎ পারো। গুয়াংঝৌয়ে ১০ বিছানার একটি ঘরে একা ছিলেন দু’সপ্তাহ। বাইরে থেকে কেউ দরজা বন্ধ করেনি বটে, তবে বেরোতে সাহস পাননি। বেরোলেই যদি ‘দুশমন’ চিহ্নিত হতে হয়! চিনের অন্যত্র যাঁরা কোয়রান্টিনে, তাঁদের বাড়ির দরজায় ইলেকট্রনিক অ্যালার্ম। দরজা খুললেই নিঃশব্দে বার্তা যাবে রক্ষীদের কাছে। প্রত্যেক বাড়িতে নোটিস সাঁটা, পাশের বাড়িতে নজর রাখুন। কেউ দরজা খুললেই খবর দিন।
আরও পড়ুন: কিমকে দেখা যেতে না যেতেই সীমান্তে দুই কোরিয়ার গোলাগুলি
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)