আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে জাপানে। ছবি: এপি।
গত দু’মাস যাবৎ সতর্কতা অবলম্বন করেও করোনার প্রকোপ ঠেকানো যাচ্ছে না কিছুতেই। বরং সোমবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৩ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। মৃত্যুসংখ্যাও বেড়ে হয়েছে ৮৫। এমন পরিস্থিতিতে এ বার দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণার চিন্তাভাবনা করছে জাপান সরকার।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এই ঘোষণা করতে পারেন বলে জানিয়েছে সে দেশের ইয়োমিয়ুরি সংবাদপত্র। মন্ত্রী-আমলাদের সঙ্গে আলোচনা সেরে সোমবারই সেই সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে বলে জানা গিয়েছে। তবে বুধবারের আগে কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করা যাবে না বলে দাবি সংবাদ সংস্থা কিয়োদোর।
জানুয়ারির মাঝামাঝি জাপানে প্রথম করোনা আক্রান্তের হদিশ মেলে। তার পর দেশের সমস্ত স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন আবে। তবে স্কুল বন্ধ থাকলেও জনজীবন আগের মতোই স্বাভাবিক সেখানে। অফিস, রেস্তরাঁ, শপিংমল সবই খোলা রয়েছে। যানবাহনও চলছে আগের মতোই।
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত ২৬ নার্স, ৩ চিকিৎসক, ‘সংক্রামক’ ঘোষিত হাসপাতাল
কিন্তু গত কয়েক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়ে গিয়েছে সেখানে। শুধুমাত্র টোকিয়োতেই আক্রান্তের সংখ্যা ১০০০ ছাড়িয়েছে। তাতে কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করা নিয়ে সরকারের উপরও চাপ বাড়ছিল। গত সপ্তাহেই এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন টোকিয়োর গভর্নর ইয়ুরিকো কইকে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এ ছাড়া উপায় নেই বলে জানিয়ে দেন তিনি।
তবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা হলেও, তা দেশের সর্বত্র কার্যকর করা যাবে কি না, তা নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা রয়েছে। আপাতত গ্রেটার টোকিয়ো মেট্রোপলিটন, ওসাকা এবং হিয়োগোতেই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হবে বলে দাবি সংবাদপত্র ইয়োমিয়ুরির।
আবার জরুরি অবস্থা ঘোষণা হলেও, পুরোপুরি লকডাউন কার্যকর করা যাবে কিনা, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। কারণ জাপানি আইনে লকডাউন সংক্রান্ত বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করলে শাস্তি বা জরিমানার কোনও বিধান নেই। সরকারি বিধিনিষেধ মানা বা না মানা মানুষের উপরই নির্ভর করছে।
আরও পড়ুন: ‘এটা দয়ালু ভাইরাস, তবু মৃত্যুর সংখ্যা বিরাট দাঁড়াতে পারে, সাবধান!’
এখন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে পরিস্থিতি কতটা সামাল দেওয়া যাবে, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। লন্ডনের কিংস কলেজের ইনস্টিটিউট ফর পাবলিক হেল্থ-এর ডিরেক্টর কেনজি শিবুয়ার মতে, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। ১ এপ্রিলও জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলে পরিস্থিতি অনেকটা সামাল দেওয়া যেত।