Coronavirus

বাচ্চাদের খাবার, ডায়াপারও পাওয়া যাচ্ছে না এখানে

রিচমন্ড শহরে বেশ কিছু তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার হাব রয়েছে। প্রচুর তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী থাকেন, যাঁরা মূলত অভিবাসী। আমরা সবাই গত এক সপ্তাহ আগে থেকেই সম্পূর্ণ ঘরবন্দি।

Advertisement

সোমাদিত্য কর

রিচমন্ড (আমেরিকা) শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২০ ০৩:০৪
Share:

আমেরিকায় করোনা ত্রাস। ছবি: এপি।

আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি-র উপকণ্ঠে যে শহরটিতে থাকি, তার নাম রিচমন্ড। মধ্য ভার্জিনিয়ার একটি ছোট শহর এই রিচমন্ড। মেরে কেটে আড়াই লক্ষ লোক থাকে। ভার্জিনিয়া ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়ার উপকণ্ঠে হওয়ায় প্রচুর অভিবাসী থাকেন এখানে। তাঁরা মূলত চাকুরীজীবী। উত্তর ভার্জিনিয়া বা ডিসির উপকণ্ঠের জায়গাগুলো ঘনবসতিপূর্ণ। এই রাজ্যে প্রথম কোভিড-১৯ পজ়িটিভ রিপোর্ট এল এই উত্তর ভার্জিনিয়া থেকেই, সপ্তাহ আড়াই আগে। আজকে যখন লেখাটি লিখছি, তখন করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ৪৬০। ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৫ হাজার ছাড়িয়েছে। মাত্র ১৮৬৮ জন সুস্থ হয়েছেন চিকিৎসার পরে। এই প্রসঙ্গে বলি, আমেরিকা দেশটির আয়তন ভারতের তিন গুণ, কিন্তু জনসখ্যা ভারতের তিন ভাগের এক ভাগ।

Advertisement

রিচমন্ড শহরে বেশ কিছু তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার হাব রয়েছে। প্রচুর তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী থাকেন, যাঁরা মূলত অভিবাসী। আমরা সবাই গত এক সপ্তাহ আগে থেকেই সম্পূর্ণ ঘরবন্দি। বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ অথবা সেখানে কোনও সামগ্রীই অবশিষ্ট নেই। চাল, ডাল, তেল, নুন, আনাজ, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ সব শেষ। বড় বড় ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে তাকগুলো একদম ফাঁকা। কোথাও টয়লেট-টিস্যু বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার নেই। কোথাও যদিও বা সামান্য কিছু আছে, চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। লকডাউনের আশঙ্কায় মানুষ সব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে রেখেছে। হঠাৎ করে চাহিদা এত বেড়ে গিয়েছে যে, সামাল দিতে পারছে না সরবরাহকারীরা। রাস্তাঘাট ফাঁকা। যাদের সুযোগ আছে, তাঁরা বাড়ি থেকে কাজ করছেন। যাঁদের সেই সুযোগ নেই, তাঁরা ছুটিতে আছেন। আসল সমস্যা হচ্ছে, যাঁদের বাড়িতে বাচ্চা আছে তাঁদের। তাদের খাবার, ডায়াপার কোনও কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না। কবে নতুন সাপ্লাই আসবে, তা-ও কেউ বলতে পারছে না। আমার কাছে আমার দু’বছরের ছেলের জিনিসপত্র এখনও আছে। পুরোপুরি লকডাউন হয়ে গেলে কী হবে, জানি না। আমার বাবা-মা এখন এখানে। কবে ফিরতে পারবেন, বলা মুশকিল।

এখানে মানুষের সচেতনতা বেশ ভাল। সরকার এখানকার নাগরিকদের সাহায্য করার জন্য অর্থ অনুমোদন করেছে। কিছু খাদ্যসামগ্রীর দোকান, ওষুধ আর চিকিৎসা পরিষেবা খোলা রয়েছে। কিন্তু দেরি হয়ে গিয়েছে। এই পদক্ষেপগুলো অনেক আগে করা উচিত ছিল। আমরা অনেক আগে থার্ড স্টেজে পৌঁছে গিয়েছি। তবে দেরিতে হলেও কাজ শুরু হয়েছে দ্রুত গতিতে। আশা করি, সংক্রমণ রুখে দিয়ে স্বাভাবিক জীবনের ছন্দে ফিরতে পারব অদূর ভবিষ্যতেই।

Advertisement

লেখক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement