স্টেডিয়ামে উচ্ছ্বসিত দর্শক। ছবি: রয়টার্স।
অতিমারি মাথায় নিয়েই কেটে গিয়েছে এত বছর। টিকাকরণ আশা জোগালেও, নতুন করে যে ভাবে সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করেছে, তাতে ফের আতঙ্ক দানা বাঁধতে শুরু করেছে। তার মধ্যেই ৫০০০ জন দর্শক নিয়ে কনসার্ট হয়ে গেল স্পেনের বার্সেলোনায়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই ধরনের বিনোদনমূলক জমায়েত কতটা নিরাপদ, তা পরীক্ষা করতেই মূলত কনসার্টটি আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানস্থলে ঢোকার আগে সকলের করোনা পরীক্ষাও করা হয়। তাতে ৬ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়লেও, শনিবার রাতে কনসার্ট শেষ হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত কারও কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার খবর মেলেনি।
শনিবার রাতে বার্সেলোনার ‘পালাউ সান জর্দি’ স্টেডিয়ামে কনসার্টটি আয়োজিত হয়। ২৪ হাজার দর্শকাসনের ওই স্টেডিয়ামে ৫০০০ দর্শককেই প্রবেশ করানো হয়। অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘লাভ অব লেসবিয়ানস’। মাস্ক, স্যানিটাইজার, করোনা পরীক্ষা, সব মিলিয়ে টিকিটের দাম রাখা হয়েছিল ১৯০০ টাকা থেকে ২৪০০ টাকা পর্যন্ত। তার পরেও অল্প সময়ের মধ্যেই সব টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘ দিন ঘরবন্দি হয়ে থাকা মানুষ দলে দলে ভিড় জমিয়েছিলেন কনসার্টে অংশ নিতে। করোনা পরীক্ষা করে, তিন-তিন বার স্ক্রিনিং করিয়ে তবেই তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হয় সেখানে। তবে ১৮ থেকে ৬৫ বছর বয়সিদেরই কনসার্টে যাওয়ার অনুমতি ছিল সকলের, যাতে করোনা পরীক্ষার ফলাফল মোবাইলে দেখতে পারেন তাঁরা।
এর আগে, বার্সেলোনার ‘দ্য ফাইট ফর এইডস অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিস ফাউন্ডেশন’-এর তরফে ডিসেম্বরে এমন একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে সেখানে দর্শক সংখ্যা ছিল মোটে ৫০০। শনিবারের অনুষ্ঠানে দর্শক সংখ্যা ছিল তার ১০ গুণ। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে বিধিনিষেধ প্রয়োগের দায়িত্বে ছিলেন ভাইরোলজিস্ট বরিস রেভলো। তিনি বলেন, ‘‘মানুষ যাতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন, তার জন্য এ ভাবেই এগোতে হবে। কনসার্ট এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে এটা ছোট পদক্ষেপ ছিল।’’
তবে শনিবার যাঁরা কনসার্টে অংশ নিয়েছিলেন, বিশেষ পর্যবেক্ষক দল তাঁদের উপর নজর রাখছে। প্রতি মুহূর্তে স্বাস্থ্যের অবস্থা জানাতে হচ্ছে সকলকে। আগামী এক সপ্তাহ এ ভাবেই চলবে। তার মধ্যে কনসার্ট ফেরত কারও মধ্যে যদি কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়ে, সেই মতো পরবর্তী সিদ্ধান্ত এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি কনসার্ট ফেরত কারও মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ে, সে ক্ষেত্রে এক জায়গায় জড়ো হওয়া ৫০০০ জনের মধ্যে কত জন আক্রান্ত হলেন, আর দেশের জনসংখ্যার প্রতি ৫০০০ জনে কত জন আক্রান্ত হচ্ছেন, তার অনুপাত মিলিয়ে দেখবেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।