পাক গুপ্তচরেরা আল কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনের লুকিয়ে থাকার খবর আমেরিকাকে দিয়েছিলেন বলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান যে দাবি করেছেন, তা খারিজ করে দিলেন সিআইএ-র প্রাক্তন প্রধান ডেভিড পেট্রিয়াস। তাঁর দাবি, লাদেনের লুকিয়ে থাকার খবর পাক গুপ্তচর সংস্থা জানতই না। তাঁর মতে, ভারত নয়, পাকিস্তানের ‘অস্তিত্বের পক্ষে বিপদ’ হল সে দেশের মাটিতে তৎপর জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি।
আমেরিকায় ভারতীয় কনসুলেটে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সংক্রান্ত আলোচনা চক্রে পেট্রিয়াস পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তিনি মনে করেন, ইমরান কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তাঁর মতে, পাকিস্তানের বাস্তব পরিস্থিতি খুবই সঙ্কটজনক। পাকিস্তানের রাজনীতি এবং বিদেশনীতি অনেকটাই নির্ধারিত হয় ভারত-বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে। এমনকি, পাক প্রশাসনের একটা বড় অংশের মতে, পাকিস্তানের অস্তিত্বের পক্ষে ভারত বিপজ্জনক। ওই মতকে খারিজ করে পেট্রিয়াস বলেন, ‘‘ভারতের দিক থেকে পাকিস্তানের অস্তিত্বের পক্ষে বিপদের কোনও সম্ভাবনা নেই। বরং পাকিস্তানের অস্তিত্বের পক্ষে বিপজ্জনক হল, সে দেশের অভ্যন্তরে তৎপর উগ্রপন্থীরা। এই বিরক্তিকর সমস্যার মোকাবিলা করা কঠিন কাজ।’’
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ইতিবাচক পদক্ষেপ করছে না, এই অভিযোগে ইসলামাবাদের উপরে নিরাপত্তা সংক্রান্ত অনুদানে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। প্রাক্তন সিআইএ প্রধানের মতে, বহু বছর ধরে পাকিস্তানকে বিপুল অর্থ সাহায্য করেছে আমেরিকা। তাঁর কথায়, ‘‘দিনের শেষে চরম হতাশা ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়নি।’’
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম আমেরিকা সফরে গিয়ে ইমরান একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেছিলেন, পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই ওসামা সম্পর্কে এমন তথ্য দিয়েছিল, যা পরবর্তী সময় ওই জঙ্গি নেতাকে খুঁজে বার করতে মার্কিন গোয়েন্দাদের সাহায্য করেছিল। পাক প্রধানমন্ত্রীর ওই দাবি উড়িয়ে পেট্রিয়াস বলেন, ‘‘আমাদের স্থির বিশ্বাস, ওসামা যে পাকিস্তানে রয়েছে, তা আইএসআই জানত না। তারা ওসামাকে সেখানে লুকিয়ে রাখেনি। যাঁরা বলেন, অ্যাবটাবাদে পাকিস্তানিরা ওসামাকে লুকিয়ে রেখেছেন, আমরা তাঁদের সঙ্গে এক মত নই।’’ তিনি জানান, আমেরিকা পরে বুঝতে পেরেছিল ওসামা উত্তর ওয়াজিরস্তানে নেই, রয়েছেন অ্যাবটাবাদে সেনা অ্যাকাডেমির ধারে কাছে।