(বাঁ দিকে) মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ছবি: পিটিআই।
বাণিজ্য যুদ্ধ, প্রযুক্তি, মানবাধিকার, তাইওয়ান ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে গত এক দশকের মধ্যে আমেরিকা-চিনের সম্পর্ক কার্যত সব চেয়ে নীচে। উন্নত দুনিয়ার দু’দেশের তরজা প্রভাব ফেলছে বিশ্বের অর্থনীতিতেও। সেই অনিশ্চয়তার বলয়ের মধ্যেও টেস্লা কর্তা ইলন মাস্ক, অ্যাপল কর্ণধার টিম কুক চিনে গিয়েছিলেন এ বছরই। আর এ বার সে দেশে গিয়ে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে দেখা করলেন মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। আর শি গেটসের মাধ্যমে বার্তা দিলেন, ‘‘বিশ্বের বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে দু’দেশের কল্যাণে উভয়পক্ষ নানা কাজ করতে পারে।’’ সূত্রের খবর, তাঁদের বৈঠকে কৃত্রিম মেধার (এআই) প্রসারের কথাও ওঠে। এই ক্ষেত্রে মাইক্রোসফট-সহ আমেরিকার সংস্থাগুলিকে চিনে স্বাগত জানান শি।
অতিমারির আগে মূলত মাসুল যুদ্ধ এবং পরে প্রযুক্তি ক্ষেত্র তথা কৃত্রিম মেধাকে কেন্দ্র করে বিতর্কে জড়িয়েছিল দুই দেশ। বস্তুত, ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে প্রায় ছ’সাত বছর আগে থেকেই খারাপ হয়েছে দু’দেশের সম্পর্ক। উভয়পক্ষের বিরুদ্ধেই অপরকে নিজের দেশে ব্যবসা বিস্তারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। আমেরিকায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে চিনের হুয়েই, জ়েডটিই-র উপরে। উল্টো দিকে, চিনে আমেরিকার বিভিন্ন সংস্থার ব্যবসা বন্ধ হয়েছে। এর মধ্যেই অবশ্য কিছু নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সেখানে কাজ চালাচ্ছে মাইক্রোসফট ও তাদের শাখা লিঙ্কডইন। সেই লিঙ্কডইন অ্যাপও চিনে বন্ধ হতে পারে বলে খবর।
এ দিকে, পৃথিবী জুড়ে বাড়ছে কৃত্রিম মেধার ব্যবহার। মাইক্রোসফট চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি-র মূল সংস্থা ওপেনএআই-এর অন্যতম লগ্নিকারী। শি নিজেও আর্থিক উন্নতিতে কৃত্রিম মেধাকে স্বাগত জানালেও সতর্ক করেছেন তার খারাপ দিকগুলি নিয়ে।
চিনের সরকারি সংস্থা সূত্রের খবর, ‘পুরনো বন্ধু’ গেটসের সঙ্গে তিন বছর পরে দেখা হওয়ায় শি খুশি। সেই সঙ্গে বার্তা দিয়েছেন, চিন-আমেরিকা সম্পর্কের ভিত হল দু’দেশের নাগরিকেরা। তুলে ধরেছেন, সহযোগিতার সম্ভাবনার সুযোগের কথা। যা নানা কারণে ব্যাহত হয়েছে। শি-র সঙ্গে দেখা করে পাল্টা সম্মানিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন গেটসও। তার উপরে রবিবার চিন সফরে যাওয়ার কথা আমেরিকার বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের। এ ভাবে দু’দেশের মধ্যে বরফ কতটা গলে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে তা কী প্রভাব ফেলে, সে সবই এখন দেখার।