চিনের দক্ষিণ-পশ্চিমের বিস্তীর্ণ এলাকায় অতিবর্ষণ। ছবি রয়টার্স
কিছু দিন আগেই ঊর্ধ্বমুখী পারদ এবং প্রবল খরার সঙ্গে যুঝছিল চিনের দক্ষিণ-পশ্চিমের বিস্তীর্ণ এলাকা। এ বার সেখানে চোখ রাঙাচ্ছে অতিবৃষ্টি এবং তার জেরে দেখা দেওয়া বন্যার আশঙ্কা। অন্য দিকে, পাকিস্তানে হিমবাহের দ্রুত গলে যাওয়া থেকে শুরু করে অতি-বর্ষণের মতো পরিস্থিতি বড়সড় ছাপ ফেলতে পারে জলবায়ু পরিবর্তনের মাপকাঠিতে, এই চিন্তা ঘুম কেড়েছে আবহ বিশেষজ্ঞদের।
গত শনিবার থেকে নাগাড়ে বৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে চিনের সিচুয়ান প্রদেশে। যার জেরে বিশেষ ভাবে বিপর্যস্ত প্রদেশটির শহর এবং শহরতলি মিলিয়ে মোট সাতটি জায়গা। আগামী কয়েক দিনেও সেখানে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে শিলিং স্নো মাউন্টেনে। রবিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ সেখানে প্রায় ১৬৫.১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। ওই দিন বৃষ্টিঝড়ের সতর্কতাও জারি করা হয় সে দেশের আবহাওয়া দফতরের তরফে।
স্থানীয় আবহ বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, লাগাতার উচ্চ তাপমাত্রা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে শিচুয়ানে। খরার জেরে সেখানকার মাটি নয় আগের চেয়ে ছেড়ে গিয়েছে কিংবা শক্ত হয়ে উঠেছে। ফলে সেখানে এ রকম ভারী বৃষ্টি চলতে থাকলে কাদা ধসের পাশাপাশি আরও চরম প্রাকৃতিক বিপর্যয় উপস্থিত হতে পারে। পূর্ব সিচুয়ান-সহ দেশের বেশ কিছু এলাকার জন্য ‘ইয়েলো অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে দ্য ন্যাশনাল মিটিয়োরোলজিক্যাল সেন্টার (এনএমসি)-এর তরফে।
এ দিকে, গত কয়েক সপ্তাহে দক্ষিণ চিনের বহু অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি পেরিয়ে গিয়েছে। ১৯৬১ সাল থেকে যে সরকারি রেকর্ড রয়েছে তার নিরিখে এমন গরম আগে দেখেনি ওই অঞ্চল। এই পরিস্থিতিতে বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের চাহিদা।আচমকা তৈরি হওয়া এই চাহিদা সামাল দিতে না-পারা যাওয়ায় ওই অঞ্চলে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লোডশেডিংয়ের সমস্যাও।
অন্য দিকে, আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে পাকিস্তানের পরিস্থিতিও। তাঁদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের ভরকেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে এই দেশ। এই আশঙ্কায় ইন্ধন জুগিয়েছে সেখানকার শিসপার হিমবাহের দ্রুত গলে যাওয়া। পাশাপাশি গিলগিট-বালতিস্তানের হুনজ়ার বন্য পরিস্থিতিও আশঙ্কার বার্তা বয়ে আনছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন থেকেই কোমর না-বাঁধলে পরে বিপর্যয় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া রীতিমতো কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে পাকিস্তানের কাছে। যে কোনও বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য রাখতে হবে পর্যাপ্ত আয়োজনও। যাতে দুর্যোগ আছড়ে পড়লেও ক্ষতির মাত্রা একটু কম হয়।