প্রতীকী ছবি।
আমেরিকায় অতিমারির প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে প্রাপ্তবয়স্কদের উপরেই। তুলনায় শিশুদের নিয়ে সমস্যা ছিল অনেকটাই কম। তবে ওমিক্রনের উৎপত্তি বদলে দিয়েছে সেই চিত্র। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, দেশে ওমিক্রনের দাপট বাড়ার পর থেকে শিশুদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের হার বেড়েছে। এর জেরে শিশুদের হাসপাতালে ভর্তির হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সমস্যায় ইন্ধন জুগিয়েছে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া টিকা সংক্রান্ত নানা বিভ্রান্তিকর তথ্য। যা টিকাকরণ নিয়ে অকারণ আতঙ্ক ছড়িয়েছে শিশুদের অভিভাবকদের মনে। তাঁদের মধ্যে টিকা নিয়ে অনীহার সরাসরি প্রভাব পড়ছে শিশুদের উপরে।
ফিনিক্স চিল্ড্রেনস হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক ওয়াসিম বালানের মন্তব্য, ‘‘অনেক অভিভাবকই মনে করেন যে টিকাগুলি অনেক দ্রুত বাজারে আনা হয়েছে। ফলে সেগুলি কতটা নিরাপদ তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন তাঁরা। অনেকে মনে করছেন যে টিকা তাঁদের প্রজনন ক্ষমতার উপরে প্রভাব ফেলতে পারে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মা-বাবাদের এটা বুঝতে হবে যে, টিকা সবচেয়ে বড় সুরক্ষা বলয়। বিশেষত ‘মাল্টিসিস্টেম ইনফ্লেমেটরি সিনড্রোম’ থেকে শিশুদের রক্ষা করতে টিকাকরণই একমাত্র ভরসা। ’’
এক সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত পাঁচ থেকে ১১ বছর বয়সিদের মধ্যে মাত্র ২৭ শতাংশের টিকাকরণ হয়েছে আমেরিকায়। এ দিকে এ মাসে শিশুদের হাসপাতালে ভর্তির গড় এক লাফে প্রতিদিনে ৯১৪ জনে পৌঁছে গিয়েছে।
বিশেষজ্ঞেরা আরও জানাচ্ছেন, গর্ভাবস্থায় টিকাকরণ সম্পূর্ণ করলেও শিশুদের সুরক্ষার বিষয়টি অনেকটাই নিশ্চিত করা যায়। কারণ এর ফলে অ্যান্টিবডি মায়ের থেকে গর্ভস্থ সন্তানের শরীরে পৌঁছে যায়। তবে অনেক অন্তঃসত্ত্বাই এতে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তা তাঁদের জন্য কতটা নিরাপদ হবে তা নিয়ে তাঁরা সন্দিহান।
এমনকি মায়ের দুধ নিয়েও ছড়িয়েছে নানা বিভ্রান্তিকর তথ্য। সম্প্রতি অনলাইনে ছড়ানো তথ্য অনুযায়ী, প্রতিষেধক নেওয়ার পরে যে সব মায়েরা শিশুদের মাতৃদুগ্ধ খাওয়াচ্ছেন তাঁদের সন্তানদের শরীরে নাকি র্যাশের সমস্যা দেখা গিয়েছে। এমনকি মায়ের দুধ খেয়ে অনেক শিশুর মৃত্যুও হয়েছে বলে ছড়ানো হয়েছে। যদিও চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই তথ্য সম্পূর্ণ ভুল।
বেজিং অলিম্পিক্সের আর বাকি মাত্র দু’সপ্তাহ। তার আগে শহরের এক অঞ্চলের সংক্রমণ পরিস্থিতি চিন্তা বাড়িয়েছে প্রশাসনের। রবিবার আধিকারিকেরা জানান, ওই অঞ্চলের ২০ লক্ষ বাসিন্দার মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়েছে।