গুলজ়ার আহমে। —ফাইল চিত্র।
গোটা দেশের বিচার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছিলেন পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আলি আহমেদ কুর্দ। করাচিতে ‘মানবাধিকার রক্ষা ও গণতন্ত্র শক্তিশালী করতে বিচার ব্যবস্থার ভূমিকা’ শীর্ষক এক সম্মেলনে কোনও রাখঢাক না করেই কুর্দ জানান, পাকিস্তানের বিচার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে নিরাপত্তা বাহিনীগুলি। মূলত নাম না পাক সেনা বাহিনীর দিকেই আঙুল তুলেছিলেন কুর্দ। সেই অভিযোগ নস্যাৎ করতে আসরে নামলেন খোদ পাক প্রধান বিচারপতি গুলজ়ার আহমেদ। গত কাল তিনি পাক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, কোনও ধরনের চাপের কাছে তিনি কোনও দিন নতিস্বীকার করেননি।
সম্প্রতি ওয়র্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্টস-এর ‘রুল অব ল ইনডেক্স’-এ ১৩৯টি দেশের মধ্যে পাকিস্তানের নাম এসেছে ১৩০ নম্বরে। মায়ানমার, নাইজিরিয়া, ইথিয়োপিয়ার মতো দেশও পাকিস্তানের উপরে রয়েছে। পাকিস্তানের নীচে রয়েছে হাইতি, নিকারাগুয়ার মতো হাতে গোনা কয়েকটি দেশ। ওয়র্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্টস-এরই মানবাধিকার রক্ষা সংক্রান্ত তালিকায় পাকিস্তান রয়েছে ১২৬ নম্বরে। করাচির সম্মেলনে আহমেদ কুর্দকে তাই বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘২২ কোটির এই দেশকে এক জন জেনারেল দমিয়ে রাখেন। এই একই জেনারেল পাক বিচার ব্যবস্থাকেও তালিকার একেবারে তলায় নিয়ে গিয়েছেন।’’
ইসলামাবাদ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি আথার মিনাল্লাও কুর্দের কিছু কথায় সমর্থন জানিয়েছিলেন।
তবে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি সব অভিযোগই নস্যাৎ করেছেন গত কাল। তিনি বলেছেন, ‘‘কোনও প্রতিষ্ঠানের চাপ আমি নিইনি। নিজের কার্যসিদ্ধির জন্য কখনও কোনও প্রতিষ্ঠানের কথাও শুনিনি। কী ভাবে কোনও মামলার রায় দেব, তা আমাকে কেউ কখনও শিখিয়ে দেয়নি। কারও কথায় কোনও সিদ্ধান্ত আমি নিইনি। কারও কোনও দিন সাহসও হয়নি আমায় চালিত করার।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, তিনি যখনই কোনও মামলার রায় দিয়েছেন, নিজের বিচারবুদ্ধি ও বিবেকের ভরসাতেই দিয়েছেন।
ইসলামাবাদ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি আথার মিনাল্লা অবশ্য কুর্দকে ধন্যবাদ দিয়ে জানিয়েছিলেন, দেশের মানুষ ও বার সংগঠন বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে কী ভাবছে, তা জানা দরকার। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও স্বাধীনচেতা বিচারপতিই কখনও দাবি করতে পারেন না যে তিনি কোনও চাপের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি যদি সেটা করে থাকেন, তা হলে তা তাঁর শপথের পরিপন্থী।’’