প্রতীকী ছবি।
করোনার নয়া স্ট্রেনের দাপটে ত্রস্ত ব্রিটেন। প্রশাসনের তরফে ব্রিটেনবাসীকে কঠোর ভাবে লকডাউন-বিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ব্রিটেনের ডেপুটি চিফ মেডিক্যাল অফিসার জোনাথন ভ্যান-ট্যাম দেশবাসীকে সতর্ক করে জানান, প্রতিষেধক নেওয়া কোনও ব্যক্তির থেকেও করোনা ছড়াতে পারে। প্রতিষেধক নেওয়া ব্যক্তি অন্য কোনও ব্যক্তিকে সংক্রমিত করতে পারবেন না, এমন প্রমাণ এখনও মেলেনি।
একটি ব্রিটিশ দৈনিকে আজ ভ্যান-ট্যামের করোনা সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, করোনা থেকে বাঁচতে এখনও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এর অন্যথা হলেই বিপদ। তাঁর কথায়, “যাঁরা করোনার টিকা নিয়েছেন এবং নেননি— সকলকেই কঠোর ভাবে লকডাউন বিধি মানতে হবে। কেউ করোনার টিকা নিলে তাঁর দেহে কোভিড-১৯ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠতে অন্তত তিন সপ্তাহ সময় লাগে।” তাঁর যুক্তি, ওই তিন সপ্তাহের মধ্যে এই ব্যক্তি করোনা-আক্রান্ত হতেই পারেন এবং অন্যকে সংক্রমিত করতে পারেন। তিনি বলেছেন, “সংক্রমণের উপরে প্রতিষেধকের প্রভাব কতটা, তা আমরা এখনও জানি না।”
একই সঙ্গে ভ্যান-ট্যাম মনে করিয়ে দিয়েছেন, কোনও প্রতিষেধকই ১০০% কার্যকর নয়। অতএব প্রতিষেধক নিলেই যে করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকা যাবে, এমন নিশ্চয়তা নেই। তাঁর সতর্কবার্তা, “আপনি যদি বিধি মেনে না-চলেন, তা হলে নিজেও সংক্রমিত হতে পারেন এবং অন্যের বিপদ ডেকে আনতে পারেন। ফলে সংক্রমণের সংখ্যা ক্রমশই বাড়তে থাকবে।” ভ্যান-ট্যাম মনে করেন, করোনার টিকা নিঃসন্দেহেই সকলের মনে ‘আশা’র সঞ্চার করেছে। অদূর ভবিষ্যতে সংক্রমণের হার কমবে। কিন্তু ব্রিটেনে সংক্রমণ হ্রাসের লক্ষণ এখনও দেখা যাচ্ছে না। শনিবারও ব্রিটেনে ১৩৪৮ জন করোনা-আক্রান্ত মারা গিয়েছেন। যার ফলে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৯৭ হাজার পেরিয়েছে। ব্রিটেনের স্বাস্থ্যসচিব ম্যাট হ্যানকক জানান, টিকাকরণ কর্মসূচির অগ্রগতি খুবই ভাল।
করোনা সংক্রমণ নিয়ে সম্প্রতি একটি নয়া গবেষণায় নতুন দিশার সন্ধান দেওয়া হয়েছে। আমেরিকার রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষকের গবেষণাপত্র একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে উঠলে, তিনি অন্তত ছ’মাস বা তার বেশি সময় পর্যন্ত করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারেন। সব সময়ের জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি রাখার পরিবর্তে শরীরে ‘মেমরি-বি’ কোষ তৈরি হচ্ছে। ওই ব্যক্তি দ্বিতীয় বার করোনা সংক্রমিত হলে, ওই ‘মেমরি-বি’ কোষ নতুন করে অ্যান্টিবডি তৈরি করছে। যা আরও সক্রিয় ভাবে করোনার সঙ্গে লড়াই করতে করছে।