(বাঁ দিকে) কানাডার পুলিশকর্মী হরিন্দর সোহি। রবিবার ব্রাম্পটনে মন্দিরের সামনে খলিস্তানপন্থী পতাকা হাতে সোহি (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
কানাডার ব্রাম্পটনে মন্দিরের বাইরে খলিস্তানপন্থীদের বিক্ষোভে সে দেশের এক পুলিশকর্মীও শামিল ছিলেন বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় ইতিমধ্যে পদক্ষেপ করেছে কানাডা সরকার। হরিন্দর সোহি নামে ওই পুলিশকর্মীকে ইতিমধ্যে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করা হয়েছে। তিনি কানাডার পিল অঞ্চলে সার্জেন্ট পদে কর্মরত ছিলেন। সোমবার এ কথা জানিয়েছেন পিল অঞ্চলের পুলিশের মুখপাত্র রিচার্ড চিন।
গত রবিবার ব্রাম্পটনে ‘হিন্দু সভা মন্দির’-এ পুজো দিতে গিয়েছিলেন বেশ কয়েক জন ভক্ত। ওই সময় মন্দিরের সামনে ভারতে ১৯৮৪ সালের শিখ-বিরোধী হিংসার প্রতিবাদে অবস্থানে বসেছিলেন খলিস্তানপন্থী কয়েক জন। তাঁদের হাতে ছিল খলিস্তানপন্থী সংগঠনের পতাকা, লাঠি। অভিযোগ, ভক্তেরা মন্দিরে ঢোকার চেষ্টা করলে তাঁদের উপরে চড়াও হয় খলিস্তানপন্থী জনতা। ওই হামলার নিন্দা করেছে বিদেশ মন্ত্রক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও সমাজমাধ্যমে কানাডার উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন। ওই ‘কাপুরুষোচিত হামলা’-র ঘটনার যথাযথ বিচারের কথা বলেছেন তিনি। এর পরে সোমবার রাতেই জানা যায় ওই পুলিশকর্মীকে নিলম্বিত করেছে কানাডার প্রশাসন।
ব্রাম্পটন মন্দিরের বাইরে খলিস্তানপন্থীদের বিক্ষোভের একটি ভিডিয়ো ইতিমধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে (যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। ওই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে হরিন্দরকে। আশপাশের জনতা ভারত বিরোধী স্লোগান তুলছিলেন। তার মাঝে খলিস্তানপন্থী পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে পুলিশকর্মীকে।
ওই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কানাডার সরকারি সংবাদমাধ্যম ‘সিবিসি’-কে পুলিশের মুখপাত্র রিচার্ড জানিয়েছেন, ওই ভিডিয়োটি কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। বিক্ষোভের সময়ে তিনি তখন কর্তব্যরত অবস্থায় ছিলেন না। কানাডার সম্প্রদায় সুরক্ষা ও পুলিশ আইন অনুসারে তাঁকে নিলম্বিত করা হয়েছে। সে দিন ওই মন্দির চত্বরে ঠিক কী ঘটেছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশের মুখপাত্র।
প্রসঙ্গত, খলিস্তানিপন্থী নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জরের হত্যার পর থেকেই কানাডা এবং ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতের ‘ভূমিকা’ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন ট্রুডো। যদিও ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েনের আবহেই কানাডায় দীপাবলি পালন করতে দেখা গিয়েছে ট্রুডোকে। এরই মধ্যে রবিবার ব্রাম্পটনের ঘটনায় নতুন করে অস্বস্তিতে কানাডা সরকার। হামলায় জড়িতদের শাস্তির জন্য ভারত ক্রমশ চাপ বৃদ্ধি করছে কানাডার উপর। এই আবহেই সোমবার হরিন্দরকে কানাডার পুলিশবাহিনী থেকে নিলম্বিত করল ট্রুডোর প্রশাসন।