হিজাব ছাড়া প্রকাশ্যে বেরোচ্ছেন ইরানের অনেক মহিলাই। ফাইল ছবি।
ইরানে মহিলাদের মধ্যে হিজাব না পরার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ইদানীং অনেকেই হিজাব না পরে প্রকাশ্যে চলাফেরা করছেন। মহিলাদের এই স্বাধীনতায় রাশ টানতে উদ্যোগী হয়েছে ইরানের প্রশাসন। তারা দেশের জনবহুল এলাকাগুলিতে ক্যামেরা লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শনিবার ইরানের পুলিশ প্রশাসনের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, দেশের নানা প্রান্তে জনবহুল এলাকাগুলিতে ক্যামেরা লাগানো হবে। হিজাব ছাড়া যে সমস্ত মহিলারা রাস্তায় বেরোচ্ছেন, ক্যামেরার নজরদারির মাধ্যমে তাঁদের চিহ্নিত করা হবে। তার পর তাঁদের শাস্তিও নিশ্চিত করবে প্রশাসন।
সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, যে মহিলাদের প্রকাশ্যে হিজাব ছাড়া চলতে দেখা যাবে, তাঁদের মোবাইলে প্রথমে একটি সতর্কতামূলক টেক্সট মেসেজ যাবে। তার পরেও সতর্ক না হলে শাস্তির মুখে পড়বেন ইরানি মহিলারা।
ইরানে মহিলাদের জন্য হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। তা না করলে দেশের আধ্যাত্মিক ভাবমূর্তি কলুষিত হয় বলে দাবি ইরান সরকারের। হিজাব আইনের লঙ্ঘন সাধারণ মানুষের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করে, জানিয়েছে সরকার। সেই কারণেই যাঁরা সরকারি নিয়ম মানছেন না, তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করতে কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ক্যামেরার নজরদারির মাধ্যমে মহিলাদের হিজাব না পরার প্রবণতায় লাগাম টানা যাবে, আশাবাদী ইরান সরকার।
গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানে ২২ বছর বয়সি তরুণী মাহশা আমিনির মৃত্যু দেশে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল। অভিযোগ, হিজাব না পরায় পুলিশ তাঁকে আটক করে। পরে পুলিশি হেফাজতে মাহশার মৃত্যু হয়। পুলিশের অত্যাচারের ফলেই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি দেশের সিংহভাগ জনতার। ওই মৃত্যুর পর থেকেই তাই দেশ জুড়ে সরকার বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যা আরও জোরদার হয়েছে। মাহশার মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরানের মেয়েদের প্রকাশ্যে চুল কেটে, হিজাব পুড়িয়ে পথে নামতে দেখা গিয়েছে। সরকারের দমননীতিও কাজে লাগেনি। বহু সাধারণ নাগরিককে গ্রেফতার করেছে ইরানের পুলিশ।
তার পর থেকেই ইরানে মহিলাদের মধ্যে হিজাব না পরার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি সরকারের। তাতে রাশ টানতে ক্যামেরার নজরদারি শুরু হল।