মোক্ষ রায় —ফাইল চিত্র।
চকচকে অভ্রের মতো কিছু দেখলেই ছুঁয়ে দেখতে চাইত ৩ বছরের ছোট্ট মেয়ে মোক্ষ। বাবা-মা তাকে বুঝিয়েছিলেন, মাইক্রোপ্লাস্টিক দিয়ে তৈরি ওই চকমকে পদার্থগুলি আমাদের এবং পরিবেশের পক্ষে কতটা ক্ষতিকর। অতটুকু মেয়ে ঠিক কী বুঝেছিল কে জানে। কিন্তু পৃথিবীর সব কিছুর উপরে তার অসীম মায়া। প্রতিটা গাছ, প্রতিটা প্রাণ নিয়ে তার প্রবল কৌতূহল। প্রকৃতিকে রক্ষা করতে অতটুকু বয়স থেকেই লড়াই শুরু করে সে। ব্রিটিশ-ভারতীয় কন্যা মোক্ষ রায় এখন সাত বছরের। পরিবেশ নিয়ে তার সচেতনতা, প্রচার এবং অবদানের জন্য ব্রিটিশ সরকার তাকে ‘পয়েন্টস অব লাইটস’ পুরস্কার দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক গরমের ছুটি কাটিয়ে ফিরে আসার পরে মোক্ষের হাতে সেই পুরস্কার তুলে দেবেন।
চিকিৎসক দম্পতি রাগিনী এবং সৌরভ রায়ের কন্যা মোক্ষ। প্রায় কুড়ি বছর আগে পশ্চিমবঙ্গ থেকে পাকাপাকি ভাবে ব্রিটেনে চলে যায় রায় পরিবার। তিন বছর বয়সেই মোক্ষ রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিবেশবান্ধব উন্নয়নমূলক প্রকল্প বা ‘সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল’ (ইউএনএসডিজি) প্রকল্পে যোগ দিয়েছিল। তার মা বললেন, ‘‘ছোট থেকেই খুব কৌতূহলী মোক্ষ। প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের জীবন পরতে পরতে কতটা জড়িয়ে আছে তা বোঝার চেষ্টা করত ও।’’
মাত্র ৫ বছর বয়সেই ১৯৩টি দেশের রাষ্ট্রনেতাকে চিঠি লিখেছে মোক্ষ। রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিবেশবান্ধব এসডিজি কর্মসূচি জাতীয় স্তরে গ্রহণ করার জন্য আর্জি জানিয়েছে রাষ্ট্রনেতাদের। পাশাপাশি, পরিবেশ বদল, লিঙ্গবৈষম্য, প্লাস্টিক দূষণের মতো বিষয়গুলি নিয়েও সচেতন হওয়ার ডাক দিয়েছে। তার অনুরোধে ব্রিটিশ সরকার পরিবেশ বদল
এবং পরিবেশ রক্ষাকে পঠনপাঠনের অন্তর্ভুক্ত করেছে। সে সবেরই চূড়ান্ত স্বীকৃতি এই ‘পয়েন্টস অব লাইটস’ পুরস্কার।
পুরস্কার পাচ্ছে জেনে ভীষণ খুশি ছোট্ট মোক্ষ। সে বলেছে, ‘‘পরিবেশকে বাঁচাতে ছোট-বড় সকলে মিলে একটু করে চেষ্টা করলেই হবে। এটা ঠিক রোজের দাঁত মাজার মতো। প্রকৃতির রোজ একটু করে যত্ন নিলে আমরা নিজেরাই ভাল থাকব। নিরাপদে থাকব।’’