নবীনতম দেশের তকমার অপেক্ষায় ছোট্ট দ্বীপ বোগানভিল

অস্ট্রেলিয়ার উত্তরে পাপুয়া নিউগিনি দ্বীপপুঞ্জের অন্তর্গত বোগানভিলে এখন প্রায় ৩ লক্ষ মানুষের বাস। আয়তন ৯৩১৮ বর্গ কিলোমিটার। মূল শহর বুকা। এটিই এখানকার রাজধানী।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বুকা (পাপুয়া নিউগিনি) শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:০৮
Share:

বিশ্বের নবীনতম দেশের মর্যাদা পেতে বুধবার গণভোট দিলেন প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে বেড়ে ওঠা ছোট্ট দ্বীপ, বোগানভিলের বাসিন্দারা। অধুনা পাপুয়া নিউগিনির অন্তর্গত দ্বীপটিতে আজ দিনভর ছিল উৎসবের মেজাজ। ইতিউতি রঙিন কাগজ আর কাপড়ের পতাকা হাতে রাস্তায় নেমেছিলেন মানুষ।

Advertisement

অস্ট্রেলিয়ার উত্তরে পাপুয়া নিউগিনি দ্বীপপুঞ্জের অন্তর্গত বোগানভিলে এখন প্রায় ৩ লক্ষ মানুষের বাস। আয়তন ৯৩১৮ বর্গ কিলোমিটার। মূল শহর বুকা। এটিই এখানকার রাজধানী। বুকা ও তার আশপাশের ছোট ছোট গ্রামে জনবসতি সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া আরাওয়া ও বুইন শহরেও বসতি কম নয়। বুধবার নতুন দেশের দাবিতে সেখানে দু’লক্ষেরও বেশি মানুষ ভোট দিয়েছেন। ভোট হয়েছে ব্যালটে। সরকারি ভাষা ইংরেজি। যদিও এখানে অন্তত ১৯ রকমের আঞ্চলিক ভাষার প্রচলন রয়েছে।

বোগানভিল নামের উৎস খুঁজতে গেলে প্রায় আড়াইশো বছর পিছনে ফিরে তাকাতে হবে। ১৭৬৮ সালে ফরাসি পর্যটক লুই আন্তোনিও দ্য বোগানভিল প্রথম দ্বীপটির খোঁজ পান। তাঁর নামেই নাম রাখা হয় দ্বীপটির। তার পর বার বার এখানে ক্ষমতার হাতবদল হয়েছে। ১৯ শতকে বোগানভিলের দখল নেয় জার্মানি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই দ্বীপেই সামরিক ঘাঁটি গড়ে তুলেছিল জাপান। ১৯৭৫ সালে স্বাধীন দ্বীপপুঞ্জ হিসেবে পাপুয়া নিউগিনির আত্মপ্রকাশের আগে পর্যন্ত বোগানভিলের রাশ ছিল অস্ট্রেলিয়ার হাতে।

Advertisement

আসলে আয়তনে ছোট হলেও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনীতিতে বোগানভিলের গুরুত্ব অনেক। বিশ্বের অন্যতম বড় তামার খনি পাঙ্গুনা রয়েছে এখানেই। সেখান থেকে বিশ্বের মোট উৎপাদিত তামার প্রায় ৭ শতাংশ আসে। এই খনির মালিকানা ঘিরে অতীতে বার বার রক্তাক্ত হয়েছে বোগানভিল। কাঁচামাল সরবরাহের জন্য ১৯৬৯ সালে বহুজাতিক শিল্পগোষ্ঠী রিও টিন্টোর সঙ্গে জোট বাঁধে পাঙ্গুনা। তখন পাপুয়া নিউগিনির বিদেশি মুদ্রা আয়ের একটা বড় অংশ আসত পাঙ্গুনার তামা বিক্রি করে। কিন্তু লাভের বখরা নিয়ে অচিরেই বিরোধ বাধে দু’পক্ষের। ১৯৮৯ সালে পাপুয়া নিউগিনির সেনা ও বোগানভিলের বিদ্রোহীদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত চলতে থাকা সেই যুদ্ধে অন্তত ২০ হাজার স্থানীয় বাসিন্দা নিহত হন। নিখোঁজ বহু। শেষমেশ পাপুয়া নিউগিনি থেকে স্বাধীনতার দাবি জানান বোগানভিলের বাসিন্দারা।

তবে নতুন দেশের মর্যাদা পেলেও বোগানভিল এখনই স্বাধীন ভাবে অর্থনীতি পরিচালনার জন্য প্রস্তুত নয় বলে মনে করছে অস্ট্রেলিয়া। এ প্রসঙ্গে বোগানভিলের নেতা রেমন্ড মাসোনো জানিয়েছেন, গণভোটের ফল বেরোলেই খনি আইনে বদল

এনে এলাকায় শান্তি ফেরানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এখন শুধু স্বাধীনতার অপেক্ষা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement