ভুটানের অর্থনীতির অনেকটাই দাঁড়িয়ে আছে পর্যটন শিল্পের উপর ভিত্তি করে। ছবি: সংগৃহীত।
ভুটানের বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ারে টান পড়ছে। কমে আসছে সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রার পরিমাণ। আর এর ফলে চিন-ভারতের মাঝে থাকা এই দেশ শীঘ্রই অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে পড়তে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। দেখা যাচ্ছে, ২০২১ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত ভুটানের হাতে ১১ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকার বিদেশি মুদ্রা ছিল। কিন্তু ২০২১ সালের ডিসেম্বরের হিসাব অনুযায়ী, এক ধাক্কায় তা কমে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৭৫২ কোটিতে।
আট লক্ষেরও কম জনসংখ্যা বিশিষ্ট এই দেশের অর্থনীতি অনেকটাই দাঁড়িয়ে আছে পর্যটন শিল্পের উপর ভিত্তি করে। কিন্তু কড়া কোভিড বিধির কারণে অতিমারি আবহ থেকেই প্রায় পর্যটনশূন্য ভুটান। একই সঙ্গে রাশিয়া-ইউক্রেনের সঙ্ঘাতের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে গম এবং তেলের দাম বৃদ্ধি করার কারণেও সে দেশের একাংশ সঙ্কটের মুখে পড়েছে।
প্রশ্ন উঠে আসছে, তা হলে কি শ্রীলঙ্কার মতোই হাল হতে চলেছে ভুটানেরও? কমতে কমতে শ্রীলঙ্কার রাজকোষ বিদেশি মুদ্রাশূন্য হয়ে পড়েছে। ব্যাপক অর্থনৈতিক সঙ্কটের দোরগোড়ায় এসে পৌঁছে উত্তাল হয়েছে সে দেশের জনতা, রাজ্য-রাজনীতি। আকাশছোঁয়া জিনিসপত্রের দামও। জনতার রোষের মুখে পড়ে গদিও ছাড়তে হয়েছে শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষেকে। দুর্বল অর্থনীতিকে চাঙ্গা না করলে ভুটানের অবস্থাও সুদূর ভবিষ্যতে শ্রীলঙ্কার মতোই হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।
তবে অর্থনীতির হাল ফেরাতে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে ভুটান সরকার। সম্প্রতি, এক বিজ্ঞপ্তিতে সে দেশের সরকার জানিয়েছে, কিছু বিশেষ যাত্রিবাহী যানবাহন, ভারী আর্থমুভিং মেশিন এবং কৃষি কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ব্যতীত বাকি সমস্ত ধরনের যানবাহন আমদানি নিষিদ্ধ করতে চলেছে। সে দেশের অর্থ মন্ত্রকের তরফে এ-ও জানানো হয়েছে, শুধু মাত্র পর্যটন শিল্পে কাজে লাগানোর জন্যই এই যাত্রিবাহী যানবাহনগুলি আমদানি করা হবে।
ভুটানের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের জুন মাস থেকে ভুটান আট হাজারেরও বেশি বিদেশি গাড়ি আমদানি করেছে। এটিও বিদেশি মুদ্রা কমে আসার প্রধান কারণগুলির মধ্যে অন্যতম বলেও মনে করা হচ্ছে।