ফাইল চিত্র।
সারা দেশের মানুষকে খুব অল্প সময়ে করোনা প্রতিষেধক দিয়ে গোটা বিশ্বের নজর কেড়েছেন তিনি। কিন্তু নিজের দেশেই সরকার গঠনে ব্যর্থ বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তাঁর দেশ চালানোর সময়সীমা শেষ হচ্ছে আজ। ফলে ইজ়রায়েলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ আরও এক বার প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে।
১৯৯৬ থেকে ’৯৯ আর ২০০৯ থেকে টানা এতগুলো বছর ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন নেতানিয়াহু। কিন্তু কয়েক বছর ধরে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ জোরালো হতে থাকে। তিনি বারবার অভিযোগ অস্বীকার করলেও তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ারে তার ছাপ স্পষ্ট হতে থাকে। ফলস্বরূপ গত দু’বছরে চার বার ভোট হয়েছে ইজ়রায়েলে। শেষেরটা হয় গত ২৩ মার্চ। নেতানিয়াহুর দল লিকুড পার্টি বেশির ভাগ আসনে জয়ী হলেও পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। জোটের জন্য রাজনৈতিক দলগুলিকে রাজি করিয়ে ২৮ দিনের মধ্যে সরকার গঠনের সময় পেয়েছিলেন ৭১ বছরের নেতানিয়াহু। কিন্তু এই ২৮ দিনে বিরোধী দলগুলিকে জোটবদ্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি এবং তাঁর দল।
দেশের প্রেসিডেন্ট রিউভেন রিভলিনকে সেই বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন নেতানিয়াহু। দেশ চালনার ভারও আপাতত প্রেসিডেন্টের হাতেই চলে গিয়েছে নিয়ম মাফিক।
ইজ়রায়েলের সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল, এই চার সপ্তাহে জোট করতে সক্ষম হবেন নেতানিয়াহুর মতো রাজনীতিক। কিন্তু মূলত রক্ষণশীল ইসলামিক র্যাম পার্টি ও অতি দক্ষিণপন্থী জিওনিজম জোটকে ঐক্যবদ্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। র্যামের নেতা মনসুর আব্বাস সংখ্যালঘু আরবদের হয়ে সওয়াল করলেই নেতানিইয়াহুর পাশে দাঁড়াতে রাজি ছিলেন। কিন্তু ধর্মীয় নেতা বেজ়ালেল স্মটরিখ আব্বাসদের ক্রমাগত সন্ত্রাসবাদী আখ্যা দেন। যার ফলে বেঁকে বসে আব্বাসের দল।
এক সময়ে নেতানিয়াহুর শিষ্য বলা হত যে নাফতালি বেনেটকে, তিনিও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জোট গড়তে অস্বীকার করেছেন। উল্টে তাঁর প্রাক্তন রাজনৈতিক গুরুকে বাদ দিয়ে ইজ়রায়েলে ঐক্যবদ্ধ সরকার গঠনের ডাক দিয়েছেন। পরিস্থিতি এখন এমনই যে নেতানিয়াহুর দীর্ঘ দিনের শত্রুপক্ষের হাতে দেশ শাসনের ভার চলে যেতে পারে। দেশবাসী যাতে পাঁচ বছর অন্তর ভোট দিয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী বাছতে পারেন, তার জন্য নতুন আইন আনার চেষ্টা করেছিল নেতানিয়াহুর লিকুড পার্টি। কিন্তু সেই আইন এখনও তৈরি হয়নি। আগামী কাল রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন প্রেসিডেন্ট রিভলিন। সরকার গঠনের আগে ফের ২৮ দিনের জন্য দেশ শাসনের ভার তিনি দিতে পারেন বিরোধী নেতা ইয়ের লাপিডকে। কারণ লিকুডের পরে তাঁর দলই পার্লামেন্টে সর্বোচ্চ আসন পেয়েছে। বেনেটের অধীনে ঐক্যবদ্ধ সরকার গঠনের পক্ষেও সওয়াল করেছেন লাপিড।