প্রতীকী ছবি।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন নজির নেই। সে দেশের সংসদ সদস্য কাজি শাহিদ ইসলাম পাপুলকে ৪ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে কুয়েতের একটি আদালত। সঙ্গে ১৯ লক্ষ কুয়েতি দিনার জরিমানা, বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ৫৩ কোটিরও বেশি। লক্ষ্মীপুর থেকে আওয়ামি লিগ সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত এই পাপুলকে ৬ জুন গ্রেফতার করেছিল কুয়েতের পুলিশ। মানবপাচার, অর্থপাচার এবং ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে। বিচারের পরে সম্প্রতি পাপুলকে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছে কুয়েতের ফৌজদারি আদালত।
কুয়েতে তাঁর সংস্থায় ১৫-২০ হাজার লোক কাজ করেন— মানুষকে এমন ধারণা দিতেন পাপুল। শাসক আওয়ামি লিগ এবং জাতীয় পার্টি মিলে লক্ষ্মীপুর আসনটি তাঁকে ছেড়ে দেয়। বিএনপি-র অভিযোগ, কয়েক কোটি টাকায় পাপুল আসলে আসনটি কিনেছিলেন। পরে স্ত্রী সেলিনা ইসলামকেও সংরক্ষিত আসন থেকে সাংসদ মনোনীত করান এই ব্যবসায়ী। জুনে কুয়েতের পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। সঙ্গে কুয়েতের দুই এমপি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তা ও পুলিশের দুই কর্মকর্তাকেও আটক করা হয়। অভিযোগ, মোটা টাকা নিয়ে মানুষকে কুয়েতে পাচার করত পাপুলের সংস্থা মারাফি কুয়েতিয়া। কুয়েতি প্রশাসনের কিছু কর্তা ঘুষ নিয়ে তাদের কাগজপত্র তৈরি করে দিতেন। বিচারের পরে কুয়েতের দুই এমপি-কে প্রমাণাভাবে মুক্তি দেওয়া হলেও পাপুল-সহ চার জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই পরিমাণ জরিমানা করা হয়েছে সবাইকে।
গত অধিবেশনে পাপুলের সংসদ-পদ খারিজের দাবি ওঠার পরে সংসদের স্পিকার শিরিন শরমিন চৌধুরী জানিয়েছিলেন, সরকারি ভাবে পাপুলের গ্রেফতারের বিষয়টি তিনি জানেন না। এ বার দণ্ডিত হওয়ায় তাঁর সাংসদ-পদ খারিজ হবে বলে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, সংসদীয় মন্ত্রকের এক কর্তা জানিয়েছেন— এমন ঘটনা বেনজির হওয়ায় নির্বাচন কমিশনই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।