(বাঁ দিকে) শেখ হাসিনা, মুহাম্মদ ইউনূস (মাঝে) এবং খালেদা জিয়া (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
মঙ্গলবার বাংলাদেশে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ওই ঘোষণাপত্র থেকে নিজেদের দূরত্ব তৈরি করেছে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। ঘোষণাপত্র নিয়ে দৃশ্যত সাবধানী বিএনপিও। এখনই কোনও স্পষ্ট মন্তব্য করতে চাইছে না তারা।
‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’র মধ্যে কোন কোন প্রসঙ্গ জায়গা পাবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যে চর্চা শুরু হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ইতিমধ্যে তার কিছুটা আভাস দিয়ে রেখেছেন। ওই ঘোষণাপত্রে উঠে আসতে পারে বাংলাদেশের সংবিধান বদলের দাবি। রবিবারই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা জানিয়েছেন, তাঁরা ‘মুজিববাদী সংবিধানকে কবরস্থ’ করতে চান। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগকে ‘অপ্রাসঙ্গিক’ ঘোষণা করার দাবিও রাখা হতে পারে ঘোষণাপত্র।
তবে এই ঘোষণাপত্র নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য স্পষ্ট মন্তব্য করতে চাইছে বিএনপি। হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ দৃশ্যত কোনঠাসা। এই অবস্থায় খালেদা জিয়ার বিএনপি পুনরায় নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করেছে বাংলাদেশে। বর্তমান প্রেক্ষিতে বিএনপি সে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বললেও তা অত্যুক্তি হয় না।
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ অনুসারে, বিএনপি নেতৃত্বের কেউ কেউ মনে করছেন এই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার আগে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন ছিল। আলোচনা ছাড়া এই ঘোষণাপত্র বিভাজন তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন বিএনপি নেতৃত্বের একাংশ। সোমবার রাতে এই ঘোষণাপত্রের বিষয়ে অবস্থান স্থির করতে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে বিএনপির। খালেদার দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর কথায়, সংবিধান হোক, আর যা–ই হোক, সিদ্ধান্ত হতে হবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এবং জনগণের মাধ্যমে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেরে গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা। পতন হয় আওয়ামী লীগের সরকারের। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর ইউনূসের প্রশাসনে উপদেষ্টা হিসাবে জায়গা পান নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ (সজীব)-এর মতো ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে আপাত ভাবে ইউনূস প্রশাসনের সম্পর্ক মসৃণই রয়েছে। তবে রবিবারই ইউনূসের সরকার জানিয়ে দিয়েছে, এই ঘোষণাপত্রের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনও যোগ নেই। এটি পুরোটাই বেসরকারি উদ্যোগে একটি আয়োজন।