বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়া হবে না, ভারত এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। রবিবার এমনটাই মন্তব্য করেছেন সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই হাসিনার প্রসঙ্গ উঠলে মাহফুজ জানান, হাসিনাকে যে ঢাকার হাতে তুলে দেওয়া হবে না, এমন খবর তিনি ‘শুনতে পেয়েছেন’।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি সম্পর্কে আলোচনায় যোগ দিয়েছিলেন মাহফুজ। তিনি জানিয়েছেন, মিত্র রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে ‘বাস্তবভিত্তিক’ সম্পর্ক রাখতে চায় ঢাকা। কোনও ভাবেই তারা কারও সামনে নতজানু হবে না। তবে কোনও রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে ‘হঠকারিতা’ বা ‘দুঃসাহস’-এর জায়গাও থাকবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ইতিমধ্যে নয়াদিল্লিকে কূটনৈতিক চিঠি (নোট ভার্বাল) পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। তার প্রাপ্তিস্বীকার করেছেন ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। কিন্তু তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। সূত্রের খবর, ওই চিঠির ‘আইনি বৈধতা’ কতটা, খতিয়ে দেখবে নয়াদিল্লি। কোনও অন্তর্বর্তী সরকার অন্য রাষ্ট্রের নির্বাচিত সরকারের কাছে কোনও রাজনৈতিক নেতার প্রত্যর্পণ চাইলে, তার সমস্ত আইনি দিকগুলি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলেই বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে। ফলে এখনই বাংলাদেশের চিঠির জবাব দেওয়া হচ্ছে না। তা দেওয়া হবে ‘যথাসময়ে’। সব দিক খতিয়ে দেখে জবাব দিতে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে বলেও খবর। এ বিষয়ে আপাতত কোনও তাড়াহুড়ো করছে না ভারত সরকার।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অবস্থান কী? রবিবার সে সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে উপদেষ্টা মাহফুজ বলেন, ‘‘একটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ওরা (ভারত সরকার) নিয়েছে। ওরা (ভারত) ওঁকে (হাসিনাকে) ফেরত দেবে না। এটা আমরা শুনতে পাচ্ছি।’’ তবে ঢাকার তরফে যা যা করা দরকার, তাঁরা সেটা করছেন বলেও জানান মাহফুজ।
উল্লেখ্য, গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশে গণ আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন হাসিনা। বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা ছাড়েন তিনি। চলে আসেন ভারতে। সেই থেকে ভারতেই রয়েছেন হাসিনা। তবে তাঁর অবস্থান গোপন রাখা হয়েছে। হাসিনার পদত্যাগের পর বাংলাদেশে ৮ অগস্ট দায়িত্ব নেয় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।