প্রতীকী ছবি।
‘এই সড়ক আমারে শেষ করকে দিছে’— ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কোর্ট ভবন এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে তাঁর পেট ফেটে সদ্যোজাত শিশুকন্যা বেরোনোর এই অভূতপূর্ব ঘটনায় শোকে পাথর হয়ে এ কথাই বলছেন নবজাতকের দাদু।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ সূত্রে জানা গিয়েছে, অতীতেও সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ওই পরিবারের আরও কয়েক জন সদস্য। পথ দুর্ঘটনায় নিহত জহাঙ্গির আলমের বাবা মোস্তাফিজুর রহমান কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘‘এই সড়ক আমারে শেষ করে দিছে। আমার দুইটা ছেলেরে নিছে। আমার ছোট ভাইডারে নিছে। ছেলের বউ, নাতনিকে নিছে। আর না জানি কারে কারে নেয়!’’
ছেলে-বউমা ও নাতনিকে হারিয়ে শোকার্ত জহাঙ্গিরের মা সুফিয়ার কান্না থামছেই না। জানা গিয়েছে, ২০০৪ সালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দুর্ঘটনায় মারা যান তাঁর ছোট ছেলে শামসুল হক। ১৯৯৫ সালে ওই রাস্তাতেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ছোট ভাই ফজলুল হকের। আর এ বার আরও এক ছেলে, বউমা ও নাতনির প্রাণ কেড়ে নিল ওই ‘অভিশপ্ত’ সড়ক। প্রত্যেকেরই কবর বাড়ির সামনে।
শনিবার বাংলাদেশের ত্রিশাল উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে কোর্ট ভবন এলাকায় রাস্তা পার হতে গিয়ে ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হয় রায়মনি গ্রামের বাসিন্দা জহাঙ্গির আলম, তাঁর স্ত্রী রত্না বেগম ও তাঁদের ছ’বছরের কন্যা সানজিদার। দুর্ঘটনার সময় ট্রাকে চাপা পড়ার পর অন্তঃসত্ত্বা রত্নার পেট চিরে জন্ম নেয় শিশু। এই মর্মান্তিক ঘটনার পাশাপাশি যে ভাবে শিশুটি জন্ম নিল, তাতে আশ্চর্য হয়েছেন অনেকে।
জহাঙ্গির ও রত্নার আট বছরের এক ছেলে ও ১০ বছরের এক মেয়েও রয়েছে। বাড়ির ছেলেরা অকালে চলে গেলেন। এখন নাতি-নাতনিকে কী ভাবে মানুষ করবেন, তা ভেবে কূল পাচ্ছেন না মোস্তাফিজুর।
জানা গিয়েছে, প্রসবের নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর শনিবার সকালে আলট্রাসনোগ্রাম করার জন্য ত্রিশালে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে ফেরার পথেই রাস্তা পার হতে গিয়ে ধাক্কা মারে ট্রাক। বর্তমানে ওই নবজাতক সুস্থই রয়েছে।