বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশে সম্প্রতি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের হামলার অভিযোগ নিয়ে এই প্রথম মুখ খুলল পদ্মাপারের অন্তর্বর্তী সরকার। সংবাদ সংস্থা এএফপিতে উল্লেখ, সাম্প্রতিক এই ঘটনাগুলিতে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলী। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা হয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূস। সেই থেকে এই প্রথম বারের জন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ নিয়ে কোনও মন্তব্য করল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।
উপদেষ্টামণ্ডলী এক সরকারি বিবৃতিতে জানিয়েছে, “কিছু কিছু জায়গায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর যে হামলার অভিযোগ উঠেছে, সেগুলি গভীর উদ্বেগের।” বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর এই ধরনের হামলা যাতে ভবিষ্যতে আর না হয়, তা নিশ্চিত করতে চাইছে অন্তর্বর্তী সরকার। সমাধানসূত্র বের করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে দ্রুত আলোচনায় বসতে চায় উপদেষ্টামণ্ডলী।
সংবাদ সংস্থা এএফপিতে প্রকাশ, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের একটি অংশের থেকে আওয়ামী লীগ বরাবর সমর্থন পেয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু, গত দেড় মাসে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলে গিয়েছে। প্রায় দেড় দশকের আওয়ামী লীগের সরকারের পতন হয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়তে হয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কার্যত গা ঢাকা দিয়েছেন। তার পর থেকেই বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলার অভিযোগ উঠে এসেছে বিগত কয়েক দিনে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হওয়ার পর অভিনন্দন জানিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তখনও তিনি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বার্তা দিয়েছিলেন। এ বার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তরফেও বিবৃতি দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হল সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষিতে। একই সঙ্গে সমস্যা সমাধানে সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠকেরও বার্তা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
পদ্মাপারের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হোসেনও জানিয়েছেন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও নিবিড় করতে আগ্রহী সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তৌহিদ বলেছেন, “ভারত ও বাংলাদেশের সরকারের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা থাকলেও, সাধারণ মানুষের মধ্যে সেই সোনালি অধ্যায় কতটা ছিল, তা নিয়ে আমার মনে সন্দেহ রয়েছে। আমি চেষ্টা করব, দুই দেশের সম্পর্ক যাতে শুধু সরকারের মধ্যে নয়, দুই দেশের মানুষের মধ্যেও হয়।”