আসিফ আলি জ়ারদারি। —ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলেন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)-র নেতা আসিফ আলি জ়ারদারি। দেশের চতুর্দশতম প্রেসিডেন্ট হিসাবে আগামী রবিবার শপথ নেবেন তিনি। অবশ্য এই প্রথম নয়, এর আগে ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর স্বামী জ়ারদারি। এই প্রথম পাকিস্তানে কোনও অসামরিক নেতা দ্বিতীয় বারের জন্য প্রেসিডেন্ট পদে বসতে চলেছেন।
একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও সম্প্রতি নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়েছেন পিপিপি নেতা তথা জ়ারদারি-পুত্র বিলাবল ভুট্টো জারদারি। শাসকজোটের একটি সূত্র মারফত জানা যায়, নওয়াজের ভাই শাহবাজ় শরিফের সরকারকে সমর্থন দেবে পিপিপি। তবে, তার বিনিময়ে জারদারিকে প্রেসিডেন্ট পদে বসানোর দাবি জানায় তাঁর দল। সেই মতোই পিএমএল-এন এবং পিপিপির জোট প্রার্থী হিসাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে নামেন ৬৮ বছর বয়সি জারদারি। উল্টো দিকে ছিলেন সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিল (এসআইসি)-র নেতা, বছর ৭৫-এর মাহমুদ খান আচাকজ়াই। তিনি পান ১১৯টি ভোট। জ়ারদারি পান ২৫৫টি ভোট।
সিন্ধ প্রদেশ এমনিতেই পিপিপি-র শক্ত ঘাঁটি। ওই প্রদেশ থেকেই সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন জ়ারদারি। বালুচিস্তান প্রদেশেও প্রতিদ্বন্দ্বীর তুলনায় বেশি ভোট পেয়েছেন তিনি। তবে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের শক্ত ঘাঁটি খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে জ়ারদারির তুলনায় বেশি ভোট পেয়েছেন আচাকজ়াই।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে ভোটের ফল প্রকাশ হয়। তাতে দেখা যায়, পিএমএল-এন জিতেছে ৭৫টি আসন, পিপিপি পেয়েছে ৫৪টি আসন। আর সবাইকে পিছনে ফেলে দিয়েছিলেন ইমরানের দল পিটিআই সমর্থিত নির্দল প্রার্থীরা। তাঁরা জিতেছিলেন মোট ৯৩টি আসনে। কিন্তু পাকিস্তানের নিয়ম অনুযায়ী ভোটের ফল ঘোষণার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নির্দল প্রার্থীদের কোনও না কোনও দলে যোগ দিতে হত। ইমরানের দল সমর্থিত নির্দলেরা যোগ দেন সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলে। আচাকজ়াই নিজে পাখতুনখোয়া মিল্লি আওয়ামি পার্টি (পিকেএমএপি)-র সদস্য হলেও তিনি কাউন্সিলের হয়েই ভোটে লড়েন। তাঁকে সমর্থন জানান ইমরানের দল সমর্থিত নির্দল প্রার্থীরা এবং ছোট কিছু দল।
এত দিন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন ইমরানের দলের নেতা আরিফ আলভি। তাঁকে সরিয়েই এ বার প্রেসিডেন্ট পদে বসতে চলেছেন ব্যবসায়ী-রাজনীতিক জ়ারদারি।