কয়েক দিন আগে এ ভাবেই হামলা চালানো হয়। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
দস্তানা পরা হাতে ঘর-মোছা আর ঝাঁট দেওয়ার সরঞ্জাম। ব্রিটেনে ভারতের হাইকমিশনার রুচি ঘনশ্যাম, তাঁর দূতাবাসের সহকর্মীরা আর লন্ডনে বসবাসকারী ভারতীয়দের বড় অংশ নেমে পড়লেন সাফাইয়ে।
দু’-এক জনের গায়ে জড়ানো তেরঙ্গা পতাকা। হাইকমিশন ‘ইন্ডিয়া হাউস’ চত্বর থেকে দিন কয়েক আগেকার সহিংস বিক্ষোভের দাগ মুছে দিচ্ছিলেন ওঁরা। মোছা হচ্ছিল ডিম, টোম্যাটো, নরম পানীয় আর ইটপাথরের চিহ্ন। জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের প্রতিবাদ করতে এসে গত ৩ সেপ্টেম্বর সে সব ছুড়ে গিয়েছিলেন পাকিস্তান ও খলিস্তানপন্থী বিক্ষোভকারীরা। সেই হিংসার জবাবে গাঁধীগিরির কূটনীতিতে নেতৃত্ব দিলেন হাইকমিশনার স্বয়ং।
অনেকে মিলে যত্নে মুছলেন ইন্ডিয়া হাউসের দেওয়াল। রুচি বলছিলেন, ‘‘এটাই ভারতের জবাব। আমরা সব সময়ে ঘৃণার জবাব দিই ভালবাসা দিয়ে।’’ লন্ডনের বাসিন্দা রশ্মি মিশ্র বললেন, ‘‘যা হয়েছে, সেটা যেন আমাদের বাড়ি, আমাদের মায়ের উপরে আক্রমণ। তাই এসেছি তাকে সাফসুতরো করতে।’’ ভারতীয় পতাকা হাতে নিয়ে গৌরব নামে আর এক প্রবাসী বললেন, ‘‘এটাই আমাদের সংস্কৃতি। হাসি আর ভালবাসায় উত্তর দেওয়া।’’ সাফাইয়ে যোগ দেওয়া বিনোদ টিকুর মতে, এই উদ্যোগের নেপথ্য-বার্তাটি হল, বিক্ষোভ সব সময়ে শান্তিপূর্ণই হওয়া উচিত।
গত ১৫ অগস্ট এই হাইকমিশনের বাইরেই স্বাধীনতা দিবস পালনের সময়ে আক্রান্ত হন মহিলা ও শিশু-সহ ভারতীয়রা। ঘটনার নিন্দা করেছিলেন লন্ডনের পাক-বংশোদ্ভূত মেয়র সাদিক খান। ৩ সেপ্টেম্বরের ভাঙচুরের ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ। জানা গিয়েছে, ইনাম-উল-হক নামে বার্মিংহামের এক বাসিন্দাই সে দিনের বিক্ষোভের মস্তিষ্ক। ১৪ সেপ্টেম্বর আরও একটি বিক্ষোভের সম্ভাবনার কথা জানতে পেরে বিদেশ মন্ত্রক, কমনওয়েলথের দফতর ও দিল্লির ব্রিটিশ হাইকমিশনকে সতর্ক করেছে লন্ডনের ভারতীয় হাইকমিশন।