সেনাপ্রধান কমর জাভেদ বাজওয়া।
এক দিকে সেনা, অন্য দিকে পুলিশ। দুই বাহিনীর টানাপড়েনে উত্তপ্ত পাকিস্তানের করাচি। প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ় শরিফের জামাই মহম্মদ সফদরকে গ্রেফতারের নির্দেশে সই করানোর জন্য সিন্ধুপ্রদেশ পুলিশের আইজি মুস্তাক মেহরকে পাক রেঞ্জার্স বাহিনী তাঁর বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দাবি, ১৯ অক্টোবর ভোরের সেই ঘটনার জেরে বন্দর শহরে ‘গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি’। কোনও কোনও সূত্রে দুই বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ এমনকি তাতে মৃত্যুও ঘটেছে বলে দাবি করা হচ্ছিল। কিন্তু করাচির সংবাদমাধ্যম তা খারিজ করে জানিয়েছে, শহর শান্তিপূর্ণই।
তবে অস্বস্তিকর কিছু যে ঘটেছে, তা স্পষ্ট। বস্তুত, সিন্ধুপ্রদেশ পুলিশের তরফে পরপর টুইটে জানানো হয়েছে, ১৮-১৯ অক্টোবর রাতের ‘দুর্ভাগ্যজনক’ ঘটনায় বাহিনী আহত বোধ করছে। এই ‘অপমান’-এর প্রতিবাদে আইজি-সহ সব অফিসার ছুটিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে সেনাপ্রধান কমর জাভেদ বাজওয়া গত কালই ঘটনার দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সে জন্য তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, জাতীয় স্বার্থে, তদন্ত শেষ না-হওয়া পর্যন্ত ছুটিতে যাওয়া স্থগিত রেখেছেন আইজি। বাকিরাও ১০ দিন অপেক্ষা করবেন।
করাচিতে বিরোধী জোটের সভা করতে এসেছিলেন শরিফ-কন্যা মরিয়ম ও তাঁর স্বামী সফদর। সেই সময়েই হোটেল থেকে সফদরকে গ্রেফতার করে পুলিশ জানায়, তিনি মহম্মদ আলি জিন্নার সমাধিস্থলে স্লোগান দিয়েছেন, যা অসম্মানেরই শামিল। পিপিপি প্রধান বিলাবল ভুট্টো জারদারি এই ঘটনাকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বলে সমালোচনার সঙ্গে দাবি করেন, ওই রাতে কিছু লোক আইজি-র বাড়ি ঘিরে ফেলেছিল।
আরও পড়ুন: বিশ্বাসভঙ্গ! মামলা-বিদ্ধ গুগল
ভোর ৪টে নাগাদ দু’জন বাড়ির ভিতরে ঢোকে। এর পরে আইজি-কে কোনও অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। বিলাবলের প্রশ্ন, এই দু’জন কারা? বিরোধীদের দাবি, পাক রেঞ্জার্সবাহিনীই কার্যত ‘অপহরণ’ করে নিয়ে গিয়েছিল আইজি-কে। বিলাবলের এই সাংবাদিক বৈঠকের পরে সেনাপ্রধান তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।
আরও পড়ুন: চলছে পুজো-প্রস্তুতি, তবে সব নির্দেশ মেনেই
বিশেষজ্ঞদের মতে, বারবার সেনা-হস্তক্ষেপে পুলিশও বিরক্ত। সেনাকে চ্যালেঞ্জ ছোড়ার মতো ঘটনা পাকিস্তানে কিছুটা বিরলই। অনেকে পুলিশের এই ক্ষোভের নেপথ্যে সিন্ধুপ্রদেশের শাসক দল পিপিপি-র ইন্ধন দেখছেন। পুরো বিষয়টির উপরে দিল্লি নজর রাখছে বলে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য।