ঠিক যেন রূপকথা। গাছে ফলে রয়েছে থোকা থোকা আপেল। কিন্তু রং কুচকুচে কালো। কোনও অশুভ শক্তি প্রভাব খাটিয়ে যেন তার রং কালো করে দিয়েছে, ঠিক যেমন রূপকথায় হয়ে থাকে।
রূপকথা নয়, বাস্তবের মাটিতেই ফলে এই আপেল। দক্ষিণ আমেরিকার আরকানসাসে গেলেই এই কালো আপেল বাগানের দেখা মিলবে। স্বাদে হুবহু আপেল, শুধু রং কালো।
কেন এমন অদ্ভুত রং? বিশেষজ্ঞদের মতে, আরকানসাসেস জলবায়ুর কারণেই এমন কালো রং আপেলগুলির। এই অঞ্চলের ভৌগলিক অবস্থান এমনই যার ফলে নাকি দিনের বেলা প্রচুর পরিমাণে অতি বেগুনি রশ্মি পড়ে। আর রাত হলেই তাপমাত্রা আশ্চর্যজনক ভাবে কমে যায়।
আপেলের ত্বকে এর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। ত্বক ক্রমশ কালো হয়ে ওঠে। এই কালো ত্বকই ভিতরের অংশকে অতি বেগুনি রশ্মির হাত থেকে রক্ষা করে বলে বিশেষজ্ঞদের মত।
ভিতরের অংশ অন্যান্য আপেলের মতোই সুস্বাদু। ভিতরের অংশের রঙেরও কোনও পরিবর্তন হয় না।
আরকানসাস ছাড়াও তিব্বতেও এ রকম কালো আপেল পাওয়া যায়। কালো আপেল দুর্লভ। বাজার চলতি আপেলের মতো এই প্রজাতির আপেলের ফলন তুলনামূলক কম। পাঁচ থেকে ছয় বছর লাগে এই আপেল ফলতে।
এর পুষ্টিগুণ কতটা? এই প্রশ্ন অনেকের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে নিশ্চয়। পুষ্টির প্রশ্নে কিন্তু কিছুটা পিছিয়েই রয়েছে কালো আপেল।
একটি বাজার চলতি আপেলের মধ্যে চার গ্রাম ফাইবার এবং এপিক্যাটেচিন নামে একটি উপাদান থাকে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কালো আপেলের মধ্যে এই উপাদান থাকে না বললেই চলে।
তা সত্ত্বেও কালো আপেলের দাম অনেক বেশি। এক একটি আপেল বিক্রি হয় ৫০০ থেকে দেড় হাজার টাকার মধ্যে।
এই আপেল সরাসরি গাছ থেকে পেড়ে খাওয়া যায় না। সে ক্ষেত্রে স্বাদ অতটা ভাল লাগবে না। এই আপেল বেশ কিছু দিন রেফ্রিজারেটরে রেখে তার পর খেতে হয়।