রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস।—ছবি সংগৃহীত।
সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল বা রাজ্যকে কেন্দ্র-শাসিত এলাকা ঘোষণা করাটা যে-হেতু একেবারেই ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়, তাই তড়িঘড়ি এ নিয়ে মুখ খোলেনি পাকিস্তান বাদে অন্য কোনও দেশ। সম্প্রতি মাসখানেকের মধ্যে অন্তত দু’বার কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে মধ্যস্থতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতীয় সময় সোমবার সন্ধে পর্যন্ত তিনিও এই প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি। দু’দেশেই সামরিক তৎপরতা বাড়তে দেখে রাষ্ট্রপুঞ্জ অবশ্য সতর্ক আচরণ করার পরামর্শ দিয়েছে ভারত ও পাকিস্তানকে। ব্রিটেন, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়ার মতো কয়েকটি দেশ তাদের নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে আজ ফের সতর্কবার্তা দিয়েছে। তাদের আশঙ্কা, কাশ্মীর উপত্যকা ফের অশান্ত হয়ে উঠতে পারে, কিংবা জঙ্গি হামলা হতে পারে।
আমেরিকা, চিন, ফ্রান্স, রাশিয়া ও ব্রিটেন— রাষ্ট্রপুঞ্জে নিরাপত্তা পরিষদের এই পাঁচ স্থায়ী সদস্য ও অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রদূতদের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের প্রক্রিয়া সম্পর্কে আজ ওয়াকিবহাল করে নয়াদিল্লি। তাদের কাছে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, বিষয়টি সংসদের বিবেচনাধীন এবং একেবারেই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কোনও আন্তর্জাতিক আইন ভাঙা হয়নি। সুশাসন, সামাজিক ন্যায় এবং জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের আর্থিক উন্নয়নই এর মূল লক্ষ্য।
পাকিস্তানের দাবি, ভারতের এই পদক্ষেপ বেআইনি। আন্তর্জাতিক মঞ্চে আইনি পথে একে চ্যালেঞ্জ করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসলামাবাদ। এই পরিস্থিতিতে কাশ্মীর নিয়ে যুযুধান দুই পড়শি দেশকেই সংযত হওয়ার আর্জি জানিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস। তাঁর অফিসের মুখপাত্র আজ এ নিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘সম্প্রতি নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর দু’পক্ষেরই সেনা যে ভাবে সক্রিয় হয়েছে, সেটা আমাদের মিলিটারি অবজার্ভার গ্রুপের নজরে এসেছে। পরিস্থিতি যাতে কোনও ভাবেই খারাপ দিকে না-যায়, সেটা নিশ্চিত করতেই এখন ভারত-পাকিস্তানকে সংযত আচরণ করতে হবে।’’
জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী হামলা হতে পারে, এই আশঙ্কায় তিন দিন আগে এ বছরের মতো অমরনাথ যাত্রা বাতিল করেছে ভারত। বেড়েছে প্রতিরক্ষা তৎপরতাও। অমরনাথ-ঘোষণার পরেই জম্মু-কাশ্মীরে ভ্রমণরত তাদের নাগরিকদের সতর্ক করেছিল ব্রিটেন। আজ ব্রিটেনের ‘দ্য ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিস’ ফের তাদের পর্যটকদের বার্তা পাঠিয়েছে, ‘‘নয়াদিল্লিতে ব্রিটিশ হাইকমিশন পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। এই মুহূর্তে কেউ জম্মু-কাশ্মীরে থাকলে, সতর্ক থাকুন। স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলুন।’’ এই পরিস্থিতিতে উপত্যকায় জঙ্গি হামলার আশঙ্কাও অমূলক নয় বলে মনে করছে তারা। বিশেষত বাজার, ধর্মীয় স্থান বা পর্যটন কেন্দ্রে আইএস-ও হামলা চালাতে বলে সতর্ক করেছে ব্রিটেন।