আদনান আহমেদ। —ফাইল চিত্র।
করাচিতে নিজের বাড়ির সামনে অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীর গুলিতে খুন হল ২০১৫ সালে জম্মু-কাশ্মীরের উধমপুরে বিএসএফের কনভয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার মূল চক্রী, লস্কর-ই-তইবার নেতা আদনান আহমেদ। ২৬/১১-র মাস্টারমাইন্ড হাফিজ় সইদের ডান হাতও সে। গত ২ ও ৩ ডিসেম্বরের মাঝের রাতে চারটে গুলি লেগেছিল আদনানের গায়ে। সূত্রের খবর, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গোপনে করাচির একটি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল আদনানকে। গত কাল সেখানে মারা গিয়েছে সে।
এই নিয়ে এক বছরে ১২ জন ‘ভারত-বিরোধী চক্রী’ হয় খুন হল, না হলে রহস্যজনক ভাবে মারা গেল পাকিস্তানে। সম্প্রতি ২৬/১১ মুম্বই হামলার এক অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী সাজিদ মির পাকিস্তানের ডেরা গাজ়ি খানের সেন্ট্রাল জেলে মারা যায়। তাকে কেউ বা কারা বিষ দিয়েছিল। আদনানকে যে দিন গুলি করা হয়েছিল, সে দিনই, অর্থাৎ ২ ডিসেম্বর পাকিস্তানে মারা যায় লখবীর সিংহ রোডে নামে এক খলিস্তানি জঙ্গি। হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছিল সে। লখবীর খলিস্তানি নেতা জার্নেল সিংহ ভিন্দ্রানওয়ালের আত্মীয়।
আদনান ২৬/১১ মুম্বই হামলার প্রধান ষড়যন্ত্রকারী লস্কর নেতা হাফিজ় সইদের ঘনিষ্ঠ। তার রাজনৈতিক দল ‘মিলি মুসলিম লিগ’ (এমএমএল)-এর নেতাও ছিল আদনান। ২০১৫ সালে উধমপুরে লস্করের হামলায় ২ জন বিএসএফ জওয়ান নিহত হন। ১৩ জন জওয়ান জখম হয়েছিলেন। সেই হামলার ছক কষেছিল আদনান। এই হামলার তদন্ত করে এনআইএ। তারা চার্জশিটও পেশ করেছে। তদন্ত-রিপোর্ট থেকে জানা যায়, উধমপুরের হামলার ঘটনায় এক জঙ্গি ধরা পড়েছিল। সে জেরার মুখে জানায়, পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লস্কর-ই-তইবা তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। তারাই ভারতে ঢুকতে সাহায্য করেছিল ওই যুবককে। এর পরেও ২০১৬ সালে জম্মু-কাশ্মীরের পাম্পোর এলাকায় একটি সন্ত্রাসবাদী হামলা চালায় লস্কর-ই-তইবা। তাতে ৮ জন সিআরপিএফ জওয়ান প্রাণ হারান। ২২ জন জখম হন। এই হামলাটিতে সমন্বয়ের কাজ করেছিল আদনান। সূত্রের খবর, নতুন জঙ্গি নিয়োগের উদ্দেশ্য নিয়ে আদনানকে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে লস্করের শিবিরে পাঠানো হয়েছিল। সে সময়ে তাকে ভারতে প্রবেশ ও জঙ্গি হামলা ঘটাতে সাহায্য করে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এবং পাক সেনাবাহিনী। এত দিন পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির লস্কর ঘাঁটি থেকে কাজ করত আদনান। সম্প্রতি তাকে করাচিতে সরিয়ে আনা হয়। তার পরেই এই ঘটনা।