নরেন্দ্র মোদী এবং জাস্টিন ট্রুডো। — ফাইল চিত্র।
খলিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরের খুনের জন্য কানাডার পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ভারতকে নিশানা করেছিলেন তিনি। দেড় সপ্তাহের মধ্যেই সুর নরম করে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো নয়াদিল্লির সঙ্গে সুসম্পর্কের পক্ষে সওয়াল করলেন। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তি হিসাবে ভারত আত্মপ্রকাশ করেছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারত এখন উদীয়মান শক্তি। কানাডা চায় তাদের সঙ্গে আরও নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে গত বছর আমাদের বৈঠকও হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত জুন মাসে খলিস্তানপন্থী সংগঠন ‘খলিস্তান টাইগার ফোর্স’ (কেটিএফ)-এর প্রধান তথা কানাডার সারের গুরু নানক শিখ গুরুদ্বার সাহিবের প্রধান নিজ্জরকে গুরুদ্বার চত্বরের মধ্যেই গুলি করে খুন করা হয়। সেই ঘটনার তদন্তে ভারতের গুপ্তচর সংস্থার ভূমিকা ছিল বলে কানাডার পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশনে গত ১৮ সেপ্টেম্বর অভিযোগ করেছিলেন ট্রুডো। কানাডার তদন্তকারী সংস্থাগুলি এ বিষয়ে আরও বিশদে তদন্ত করছে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি দাবি করেন, বিষয়টি নিয়ে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন চলাকালীন তাঁর সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও কথা হয়েছে।
ট্রুডোর ওই বিবৃতির পরে কানাডার এক ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়। সে দেশের বিদেশমন্ত্রী মেলানি জোলি জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি ‘র’-এর কানাডার প্রধান হিসাবে দায়িত্ব সামলাতেন। ওই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় পরের মঙ্গলবার মোদী সরকার কানাডার এক শীর্ষ কূটনীতিককে পাঁচ দিনের মধ্যে দিল্লি ছাড়ার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি, নিজ্জর খুনের ঘটনায় দায় অস্বীকার করে ভারত। পরবর্তী পদক্ষেপে কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ জারি করে নরেন্দ্র মোদী সরকার। যার প্রতিক্রিয়া ট্রুডো সরকার ভারতে অবস্থানকারী কানাডার নাগরিকদের উদ্দেশে ‘বিশেষ নিরাপত্তামূলক সতর্কতা’ জারি করে। এই আবহে নয়াদিল্লির সঙ্গে ‘নিবিড় সম্পর্ক’ চেয়ে ট্রুডোর বিবৃতি ‘অবস্থান বদলের বার্তা’ বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।