শুক্রবার বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া বিমানবন্দর। ছবি: পিটিআই।
ধর্মঘটের জেরে শুক্রবার স্তব্ধ হয়ে গেল কর্নাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরু। সরকারি-বেসরকারি দফতর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যানবাহনের পাশাপাশি বন্ধ হয়ে গিয়েছে বিমান চলাচলও। বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া বিমানবন্দরে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ৪৪টি উড়ান বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কলকাতা-সহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরগামী কয়েকটি উড়ানও।
কাবেরী নদীর জলের ‘বড় অংশ’ তামিলনাড়ুকে দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ তুলে শুক্রবার ১২ ঘণ্টা কর্নাটকে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কন্নড়পন্থী কয়েকটি গোষ্ঠী এবং সে রাজ্যের কৃষক সংগঠনগুলি। কন্নড়পন্থী সংগঠন ‘কন্নড় ওকুট্টা’ এবং বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের এই বন্ধকে সমর্থন জানিয়েছে কর্নাটকের অটো রিকশা এবং হেল রাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন। ফলে শুক্রবার কর্নাটকের রাস্তায় ওলা, উবরের মতো ক্যাব পরিষেবা মিলছে না। শপিং মল, সিনেমা হলও বন্ধ।
অগস্টের গোড়ায় তামিলনাড়ু সরকার কর্নাটক থেকে প্রতি দিন কাবেরীর ২৪ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার জন্য আদালতে আর্জি জানায়। তার পর আদালতে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয় কর্নাটক সরকারও। তার আগে কর্নাটক সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, তামিলনাড়ুর কাবেরী উপত্যকায় পানীয় জলের সঙ্কট মেটাতে এবং চাষাবাদের সুবিধার্থে তারা কিছু পরিমাণ জল ছাড়তে প্রস্তুত। কিন্তু কর্নাটক যে পরিমাণ জল ছাড়ার কথা জানিয়েছিল, তাতে সন্তুষ্ট হয়নি তামিলনাড়ু।
সম্প্রতি তামিলনাড়ুকে ১৫ দিনের জন্য পাঁচ হাজার কিউসেক জল ছাড়তে কর্নাটককে নির্দেশ দিয়েছে কাবেরী জল বণ্টন পর্ষদ বা কাবেরী ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (সিডব্লিউএমএ)। এই সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে চায়নি সুপ্রিম কোর্ট। তার পরেই নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে কর্নাটকে। কম বৃষ্টির কারণে এমনিতেই কর্নাটকের জলাধারগুলিতে জলাভাব দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। কর্নাটকের কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে কৃষকদের স্বার্থ উপেক্ষা করার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি, জেডিএস-এর মতো কর্নাটকের বিরোধী দলগুলি।
প্রসঙ্গত, কাবেরী নদীর জলবন্টন নিয়ে তামিলনাড়ু এবং কর্নাটকের বিবাদ অবশ্য নতুন নয়। দক্ষিণ ভারতের এই নদীটির কর্নাটকে উৎপত্তি। তার পর তামিলনাড়ুতে ঢুকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে গোদাবরী, কৃষ্ণার পর দক্ষিণ ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম নদী কাবেরী। প্রসঙ্গত, কর্নাটকে কংগ্রেস একক ভাবে ক্ষমতায় রয়েছে। তামিলনাড়ুতে ডিএমকে-র নেতৃত্বাধীন শাসকজোটের শরিক কংগ্রেস।