প্রতীকী ছবি।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) সমস্যার পুরোপুরি সমাধানে ভারত এবং চিনের পদক্ষেপকে স্বাগত জানাল আমেরিকা। জো বাইডেন সরকার মনে করে, সেনা সরানোর সিদ্ধান্ত ভারত-চিন সীমান্তে ‘উত্তেজনা হ্রাস’ করবে। তবে আমেরিকা এ-ও স্পষ্ট করে, এই বিষয়ে তারা কোনও ভূমিকা পালন করেনি।
আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার তাঁর বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ভারত-চিন সীমান্তে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ের দিকে ওয়াশিংটন নজর রাখছে। ভারতের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু সীমান্তের ‘উত্তেজনা হ্রাসে’র ব্যাপারে তাঁরা কোনও ভূমিকা নেননি।
গত সপ্তাহেই লাদাখে সেনা অবস্থান নিয়ে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতায় পৌঁছেছে ভারত এবং চিন। চার বছরের বেশি সময় ধরে চলা অচলাবস্থা কেটেছে। চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশই দেপসাং, ডেমচক এলাকা থেকে সেনা সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, এই চার বছরে যে সব অস্থায়ী সেনা ছাউনি তৈরি হয়েছিল, তা-ও সরিয়ে ফেলা হবে। আগের মতোই দু’দেশের সেনাই টহল দেবে সীমান্তে। কিন্তু ‘টহলদারি সীমানা’ নিয়ে যাতে কোনও ভুল বোঝাবুঝি তৈরি না হয়, নজর থাকবে সে দিকেও। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, সেনা প্রত্যাহারের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। মঙ্গলবার চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লিন জিয়ান জানিয়েছেন, সেনা প্রত্যাহারের কাজ ‘মসৃণ ভাবে’ চলছে।
দু’দেশের সেনা সরানোর প্রক্রিয়ার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে উপগ্রহচিত্রের মাধ্যমে। আমেরিকার ম্যাক্সার টেকনোলজির নেওয়া উপগ্রহ চিত্রে স্পষ্ট, ডেপসাং ও ডেমচক এলাকায় বিভিন্ন অস্থায়ী সেনা ছাউনি ভেঙে ফেলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এলএসি পেরিয়ে পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় অনুপ্রবেশের অভিযোগ উঠেছিল চিনা ফৌজের বিরুদ্ধে। উত্তেজনার আবহে ওই বছরের ১৫ জুন গলওয়ানে চিনা হামলায় নিহত হয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় সেনা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতীয় জওয়ানদের পাল্টা হামলায় বেশ কয়েক জন চিনা সেনাও নিহত হয়েছিলেন। সেই থেকেই সীমান্তে উত্তেজনার পারদ চড়চড়িয়ে বাড়তে থাকে। গত চার বছরে দু’দেশের সেনাকর্তাদের মধ্যে একাধিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা ফলপ্রসূ হয়নি। তবে গত ২১ অক্টোবর সীমান্তে চলমান উত্তেজনা হ্রাসের ব্যাপারে ঐক্যমতে পৌঁছয় ভারত এবং চিন। আমেরিকার মতো রাশিয়াও দু’দেশের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।