জেনিফা ফ্লেভেলেন। ছবি সংগৃহীত।
মানসিক অবসাদের মতো ‘অসুখ’ সারাতে চিকিৎসকেরা প্রায় সব সময়ই বলেন, ‘‘হাসি, খুশি, মজায় থাকুন!’’ হাসিই অসুখের সেরা ওষুধ, এমন প্রবাদ ফের এক বার প্রমাণিত হল। তবে মানসিক অবসাদ নয়, পাঁচ বছর কোমায় থাকা এক মহিলা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এলেন। মায়ের মুখে শোনা একটি ‘জোক’ মেয়ের শরীরে স্পন্দন ফিরিয়ে দিয়েছে!
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, মিশিগানের বাসিন্দা জেনিফা ফ্লেভেলেন নামে এক মহিলা ২০১৭ সালে গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। মাথায় আঘাত পান। চিকিৎসকেরা তাঁকে প্রাণে বাঁচিয়ে দেন। কিন্তু কোমায় চলে যান তিনি। তার পর কেটে গিয়েছে পাঁচ বছর। নিস্পন্দ মেয়ের শরীরটাকে আগলে রেখেছিলেন মা পেগি।
পাঁচ বছর পর আচমকাই এক ‘অলৌকিক’ ঘটনা ঘটে। সংবাদমাধ্যম ‘পিপল’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘‘এক দিন মেয়েকে ‘জোকস’ শোনাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি জেনিফার শরীরে কাঁপুনি দিচ্ছে। তখনই বুঝতে পারি, সে কোমা থেকে ফিরে এসেছে।’’ পেগি মনে করেন, তাঁর বলা ‘জোকস’ই এই ‘আশ্চর্যজনক’ ঘটনা ঘটিয়েছে।
পেগি যখন কথাগুলি বলছিলেন তখন তাঁর চোখ জলে ভরে গিয়েছে। দুঃখের নয়, পাঁচ বছর পর মেয়েকে ‘ফিরে’ পেয়ে খুশিতে কাঁদছেন। তাঁর কথায়, জেনিফার চার বছর ১১ মাস ‘নিথর’ থাকার পর ‘যুদ্ধ’ জয়ের হাসি হেসেছে। সেই হাসি ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা পরিবারের মুখে। যদিও জেনিফার এখনও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেননি। কথা বলার ক্ষমতা এখনও ফিরে পাননি। তবে চিকিৎসকেরা আশাবাদী খুব তাড়াতাড়ি আবার জেনিফার স্বাভাবিক জীবনে চলে আসবেন।
পেগি জানান, জেনিফার এ ভাবে ফিরে আসাকে চিকিৎসকেরা ‘বিরল’ ঘটনা বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর চিকিৎসা এখনও চলছে। চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে সকলের কাছে সাহায্য চাওয়া হচ্ছে। পেগি বিশ্বাস করেন তাঁর মেয়ে আবার আগের মতো কথা বলবে, হেঁটে চলে বেরাবে।
সমাজমাধ্যমে জেনিফার এবং পেগির জীবনের গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই জানতে চাইছেন, কী ‘জোকস’ শুনে জেনিফা কোমা থেকে বেরিয়ে এলেন, তা জানতে চাওয়া হয়। তাঁদের দাবি, সেই মজার কথা শুনে আনন্দ পেতে চান তাঁরাও। সকলেই জেনিফার দ্রুত আরোগ্য কামনা করছেন।