ছবি: ইউটিউব
যেন বাস্তবের টারজান! ১৯৭২ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় বাবা প্রাণে বাঁচতে দুই সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন জঙ্গলে। সেই থেকে টানা ৪১ বছর, জঙ্গল থেকে বাইরে আসেননি হু ভ্যান ল্যাং। জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই মানব সভ্যতার থেকে অনেকদূরে, তাই মানবজীবনের অনেক জৈবিক চাহিদার বোধই তৈরি হয়নি ল্যাংয়ের মধ্যে। তিনি না বোঝেন যৌনতা, না জানেন, মহিলা কাদের বলে। ২০১৩ সালে তারপর নিঃশব্দে উদ্ধার করা হয় ল্যাংকে। স্থানীয় একটি গ্রামে এনে রাখা হয়। তারপর থেকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক মানবজীবনের সঙ্গে পরিচয় হতে থাকে ল্যাংয়ের। এতদিন পর তাও কিছুটা মানবসভ্যতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পেরেছেন তিনি। এত দিন পর প্রকাশ্যে এসেছে তাঁর গল্পটি।
ভিয়েতনাম যুদ্ধে ল্যাংয়ের মা ও এক ভাইয়ের মৃত্যু হয়। অপর দুই সন্তানকে নিয়ে জঙ্গলে পালিয়ে যান ল্যাংয়ের বাবা। তারপর থেকে শিকার করে খাবার জোগাড় করতে, বাদুড়, ইঁদুর খেতে শিখেছেন ল্যাং। এই গোটা বনবাসের মধ্যে কোনওদিন যৌনতা বা মহিলাদের নিয়ে বাবা একটিও কথা বলেননি ল্যাংকে। ল্যাংও কোনওদিন যৌন চাহিদা বোধ করেননি। এমনকী পরে যখন ল্যাংয়ের বাবাকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়, তখনও তিনি আসতে চাননি, কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন, ভিয়েতনামের যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি। ২০১৫ সালে এই অদ্ভুত পরিবারের কথা প্রথম জানতে পারেন একজন চিত্রগ্রাহক। তিনি যখন ছবি তুলতে যান, তখন তাঁকে দেখে ভয়ে, আতঙ্কে পালিয়ে গিয়েছিলেন ল্যাংরা। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কিন্তু ল্যাংয়েদের কথা সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশ্যে আনলে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার আগেই সংবাদমাধ্যমের ভিড় জমতে শুরু করত। তাতে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়তেন তাঁরা। সেই কারণেই এতদিন বাদে প্রকাশ্যে আনলেন সবটা।