ধ্বংসস্তূপ: ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত অঞ্চলে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। শনিবার তুরস্কের এলাজ়িগে। রয়টার্স
শক্তিশালী ভূমিকম্পে পূর্ব তুরস্কে মৃত্যু হল কমপক্ষে ২১ জনের। আহত হাজারের বেশি। ৬.৮ কম্পাঙ্কের ভূকম্পনটির কেন্দ্র ছিল এলাজ়িগ প্রদেশ। তুরস্কের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের তলা থেকে ৪০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। আরও ২০ জন আটকে থাকার আশঙ্কা রয়েছে। কম্পন টের পাওয়া যায় সিরিয়া, লেবানন ও ইরানেও।
বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী জানিয়েছে, ভূমিকম্প কবলিত এলাকায় পৌঁছে গিয়েছে চারশো’র বেশি উদ্ধারকারী দল। গৃহহীনদের জন্য তাঁবু ও খাট নিয়ে গিয়েছে তারা। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলিতে বাসিন্দাদের এখনই ফিরতে নিষেধ করছে তারা। টেলিভিশন ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে উদ্ধারকারীরা। ভূমিকম্পের প্রায় ১৩ ঘণ্টা বাদে উদ্ধার করা হয়েছে এক মহিলাকে। তিনি যে ধ্বংসস্তূপের তলায় আটকে পড়েছেন তা নিজেই মোবাইল ফোনের সাহায্যে আত্মীয়দের জানিয়েছিলেন। খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। এক ১২ বছরের কিশোরকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হলেও পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। ওই কিশোরের অন্তঃসত্ত্বা মা ও বাবাকেও ১২ ঘণ্টা বাদে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এলাজ়িগ প্রদেশের এক বাসিন্দার বর্ণনায়, ‘‘হঠাৎ দেখি চার দিক থেকে আসবাবপত্র গায়ের উপরে এসে পড়ছে। সে কী ভয়ঙ্কর অবস্থা। আমরা ছুটে বাড়ির বাইরে চলে আসি।’’
আজকের ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল রাজধানী আঙ্কারা থেকে ৫৫০ কিলোমিটার পূর্বে। প্রত্যন্ত ওই এলাকাটি জনবিরল হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা তত বেশি হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে ওই অঞ্চলের রাতের তাপমাত্রা প্রতিদিন হিমাঙ্কের নীচে নেমে যাওয়ায় ব্যাপক কষ্টের মুখে পড়তে হয়েছে গৃহহীনদের। তাঁদের জন্য খাট, তাঁবু, কম্বল পাঠিয়েছে আপৎকালীন দফতর। শনিবার সকালেও ওই এলাকায় তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কের ৮ ডিগ্রি নীচে। জখমদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের পরে ১০৩১ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ১৩৭ জনকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করতে হয়। তবে তাঁদের কেউই সঙ্কটজনক অবস্থায় নেই। ১৯৯৯ সালে ইজ়মিত শহরে ভূকম্পনে মৃত্যু হয়েছিল ১৭ হাজার মানুষের।