বাগিচাপুর অঞ্চলের তৃণমূলের উপ প্রধান রাজ্জাক হোসেনের বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
বাংলার আবাস যোজনায় ঘর পাওয়ার তালিকায় নাম রয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর ব্লকের বাগিচাপুর অঞ্চলের তৃণমূলের উপপ্রধান রাজ্জাক হোসেনের। নিজের নাম বাদ দিতে হরিরামপুরের বিডিওর কাছে আবেদন করেছেন ওই উপপ্রধান। সমাজমাধ্যমে আবেদনের সেই চিঠি ‘পোস্ট’ করে প্রচারও করছেন তৃণমূলের নেতারা। যদিও ‘যথেষ্ট সম্পদশালী’ এই নেতার নাম কীভাবে তালিকায় এতদিন ধরে থাকে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।
হরিরামপুরের বিডিও অত্রি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রকৃত উপভোক্তারাই যাতে ঘর পায় সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখেই নতুন তালিকা বের হবে।’’ ২৯ নভেম্বর আবাসের নতুন তালিকা প্রকাশকরবে প্রশাসন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বাগিচাপুরের খুঁটিপুকুরের বাসিন্দা রাজ্জাক হোসেন। বাড়িতে ট্রাক্টর থেকে ধান কাটার দুটো গাড়ি রয়েছে। রাজ্জাকের দাবি, তিনি ২০১৬ সালে ঘরের জন্য আবেদন করেছিলেন। তার পর, ২০১৮ সালে সমীক্ষা যখন হয় তখন তিনি মাটির কাঁচা বাড়িতে থাকতেন। ২০২৩ সালে ভোটে জিতে তৃণমূলের উপপ্রধান হয়েছেন। পাশাপাশি তিনি যুব তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির পদেও রয়েছেন। বিরোধীদের দাবি, ২০১৮ সালে এবং তার পর ২০২২ সালে আবাসের সমীক্ষা হয়। অনেকের নাম বাদ গেলেও, তখনও তালিকায় রয়ে যায় রাজ্জাকের নাম। অথচ, এরই মধ্যে রাজ্জাক মাটির বাড়ি ভেঙে তিনতলা পাকা বাড়ি তৈরি করে ফেলেন। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, ২০২২ সালে তাঁর নাম বাদ দিতে রাজ্জাক কেন চিঠি করেননি? রাজ্জাকের বক্তব্য, “মাটির বাড়ি যখন ছিল তখন আবেদন করেছিলাম। দুই বছর আগে পাকা বাড়ি করেছি। ভেবেছিলাম নাম বাদ যাবে। তা বাদ যায়নি। এখন নাম দেখে তা বাদ দিতে আবেদন করেছি।”
অন্যদিকে, এমন ‘অবস্থাপন্ন গৃহস্থের’ নাম বারবার সমীক্ষার পরেও কীভাবে তালিকায় থাকে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। সমীক্ষার কাজে যে বিস্তর অনিয়ম হয়েছে, এই ঘটনা তা প্রমাণ করে বলে বিজেপির দাবি। বিজেপির দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সম্পাদক নিমাই সরকার বলেন, “তৃণমূলের ধনী, দরিদ্র নির্বিশেষে লোকেদের নাম ঢোকানো হয়েছে। অথচ প্রকৃত গরিবদের নাম নেই।’’ তাঁর দাবি, সমালোচনা হবে এই ভয়েই নাম বাদ দিতে আবেদন করেছেন ওই নেতা। তৃণমূলের দেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল বলেন, ‘‘এতদিনে ওঁর নামটা কাটা উচিত ছিল। কেন কাটেনি, ওই ভাল বলতে পারবে। বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেব।’’