দুর্যোগের পর ডারনা শহর। ছবি: রয়টার্স।
লিবিয়ায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। ২০ হাজার মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করছে প্রশাসন। সৌদি আরবের এক সংবাদমাধ্যম ‘আল আরবিয়া’-কে বন্দরশহর ডারনার মেয়র জানিয়েছেন, বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে সেই জলে ভেসে গিয়ে ১৮-২০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ভয়ঙ্কর ঝড় ‘ড্যানিয়েল’-এর জেরে ডারনা শহরের দু’টি বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। মেয়র জানিয়েছেন, যে সময় বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল, সেই সময় গোটা শহর ঘুমে আচ্ছেন্ন। ফলে কারও পক্ষেই টের পাওয়া সম্ভব ছিল না বাইরে ভয়ানক বিপর্যয় ঘটে গিয়েছে। আর সেই বিপর্যয় গিলে ফেলতে চলেছে গোটা শহরকে।
ডারনাতে এক লক্ষ লোকের বাস। গত রবিবার ঝড় ‘ড্যানিয়েল’ বিপুল শক্তি নিয়ে আছড়ে পড়েছিল বন্দর শহরটির উপর। রাতরাতি পুরো শহরের ছবি বদলে যায়। কেউ যেন জলের ঝাপটায় গোটা শহরকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছিল।
এখন আর কোথাও জল নেই। কঙ্কালসার শহরের আনাচে-কানাচে শুধুই মৃতদেহের স্তূপ। কাদামাটির নীচে, সমুদ্র সৈকতে শয়ে শয়ে দেহ পড়ে। সময় যত গড়াচ্ছে, ততই শহরের আকাশ-বাতাস যেন লাশের পচা গন্ধে ভরে উঠছে। বিবিসি-র এক প্রতিবেদন অনুযায়ী,দেহগুলি খোলা অবস্থায় পড়ে থাকায় সংক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে দ্রুত উদ্ধার করতে আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে লিবিয়া সরকার। এখন আর জল নেই শহরের কোথাও। শুধু ইট, পাথর আর কাদায় ঢাকা রাস্তাঘাট। মিশর, তুরস্ক এবং কাতার থেকে উদ্ধারকারী দল পৌঁছেছে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে।
বিবিসি-কে শহরের এক বাসিন্দা উসামা আল হুসাদি জানিয়েছেন, তাঁর পরিবারের মোট ৫০ জন সদস্য এই দুর্যোগে নিখোঁজ। যাঁরা বেঁচে গিয়েছেন, তাঁরা এখন স্বজনদের খুঁজে বেড়াচ্ছেন। সেই দুর্যোগের পর তিন দিন কেটে গেলেও এখনও দেহ উদ্ধার হয়ে চলেছে। এই সংখ্যা কোথায় গিয়ে থামবে, তার ঠিক নেই বলে জানিয়েছেন ডারনা শহরের মেয়র।