ক্যানসাস ও নেব্রাস্কাতেও তুষারঝড়ের জন্য পথ দুর্ঘটনায় চার জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রতীকী ছবি।
রেকর্ড ভাঙা শৈত্যপ্রভাবে কাবু উত্তর আমেরিকার অন্তত ২০ কোটি বাসিন্দা। খারাপ আবহাওয়ার জন্য আমেরিকায় কম পক্ষে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার থেকেই কানাডা ও আমেরিকার বিভিন্ন এলাকায় তাপমাত্রা -৪৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে নেমে গিয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের খবর, আমেরিকার টেক্সাস থেকে কানাডার কেবেক, এই ৩২০০ কিলোমিটার ধরে তাণ্ডব চালাচ্ছে এই তুষারঝড়। যার কবলে পড়ে আমেরিকায় ১৫ লক্ষ মানুষ কাল থেকে বিদ্যুৎহীন। বোমা বিস্ফোরণের মতোই মারাত্মক এর অভিঘাত বলে এই শৈত্যঝড়কে ‘বম্ব সাইক্লোন’ নাম দিয়েছেন আবহাওয়াবিদেরা। সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমেরিকা-কানাডা সীমান্তবর্তী এলাকা ও গ্রেট লেক অঞ্চল। তুষারঝড়ে দৃশ্যমানতা শূন্যে নেমে গিয়েছে মিনেসোটা, আইওয়া, বাফেলো, উইসকনসিন, মিশিগান ও নিউ ইয়র্কে। মন্টানায় কাল থেকে তাপমাত্রা -৪৮ থেকে -৪৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। পুরো বরফ ঢাকা মিশিগানের একাংশ। সাউথ ডাকোটায় জনজাতির মানুষেরা জ্বালানির অভাবে জামাকাপড় পুড়িয়ে আগুন জ্বালিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর। আজ থেকে পেনসিলভেনিয়া ও মিশিগানে তুষারপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এ ছাড়া, নিউ ইয়র্ক, নিউ ইংল্যান্ড ও নিউ জার্সির উপকূলবর্তী এলাকায় বন্যাও হচ্ছে। নিউ ইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হচাল জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষকে বিপদসঙ্কুল স্থান থেকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যেতে ন্যাশনাল গার্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, ব্রিটিশ কলাম্বিয়া থেকে নিউফাউন্ডল্যান্ড, গোটা কানাডার অবস্থাই শোচনীয়। তার মধ্যে উত্তর মেরু থেকে ঝোড়ো হাওয়া এসে দেশের উত্তরের পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর করে তুলেছে।
তুষারঝড়ের জন্য অসংখ্য পথ দুর্ঘটনার খবরও মিলছে। ওহায়োর রাস্তায় ৫০টি গাড়ি পরস্পরকে ধাক্কা মেরেছিল। এই দুর্ঘটনায় চার জনের মৃত্যু হয়েছে। ক্যানসাস ও নেব্রাস্কাতেও তুষারঝড়ের জন্য পথ দুর্ঘটনায় চার জনের মৃত্যু হয়েছে। তা ছাড়া, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দুর্ঘটনা ও ঠান্ডায় আরও ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। সারা দেশে মোট মৃতের সংখ্যা ১৯। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন প্রদেশের প্রশাসন নয় গাড়ি চালানোর উপরে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে, না হয়, সাধারণ মানুষের কাছে আর্জি জানিয়েছে, তাঁরা যেন নিতান্ত প্রয়োজন না হলে, বাড়ি থেকে বার না-হন।
গত কাল আমেরিকার বিভিন্ন বিমানবন্দরে মোট ৫৯০০টি উড়ান বাতিল করা হয়েছিল। শনিবার সকালে (স্থানীয় সময়) বাতিল করা হয় আরও ১৬০০ উড়ান। ফলে উৎসবের মরসুমে ঘরে ফিরতে পারছেন না বহু মানুষ, বানচাল হয়েছে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনাও।