গুসকরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি পিঙ্কি হাওলাদার। নিজস্ব চিত্র।
এক প্রসূতিকে স্থানান্তরণের পরামর্শ দিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল কর্তব্যরত এক নার্সের বিরুদ্ধে। অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মহিলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিশ্রামাগারেই সন্তান প্রসব করেন। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের গুসকরায়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান মহিলার পরিবার। চাপে পড়ে শেষমেশ মহিলাকে এবং তাঁর সন্তানকে ভর্তি নেয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র। আউশগ্রাম ১ নম্বর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রাজু সানা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত নার্সকে শোকজ করা হবে।
গুসকরা শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে ভাতার থানা এলাকার ঝর্ণা গ্রামের বাসিন্দা পিঙ্কি হাওলাদার নামে এক গৃহবধূর সোমবার সকালে প্রসববেদনা শুরু হয়। বাড়িতে তাঁর স্বামী ছিলেন না সেই সময়। জানা গিয়েছে, পিঙ্কির শাশুড়ি সন্ধ্যা হাওলাদার প্রতিবেশী সান্ত্বনা বিশ্বাসকে বাড়িতে ডাকেন। সান্ত্বনা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাত্রী। তাঁকে সঙ্গে নিয়েই পিঙ্কির শ্বশুরবাড়ির লোকেরা এবং পাড়ার কয়েক জন তড়িঘড়ি পিঙ্কিকে গুসকরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান ভর্তি করানোর জন্য।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে গোটা বিষয়টি জানিয়ে তাঁদের পুত্রবধূকে ভর্তি করানোর কথা বলা হয়। পিঙ্কির শ্বশুরবাড়ির অভিযোগ, সে সময় কর্তব্যরত নার্স তাঁদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। কাগজপত্র দেখানো হলেও তাতে বিশেষ পাত্তা দেননি ওই নার্স। এমনকি বর্ধমান মেডিক্যালে কলেজে স্থানান্তরণের পরামর্শ দিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে পিঙ্কি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বেরিয়ে যেতে বলা হয় বলেও অভিযোগ।
পিঙ্কির সঙ্গে আসা সান্ত্বনার দাবি, “রোগীকে নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢুকতেই কর্তব্যরত নার্স আমাদের মেজাজ দেখাতে শুরু করেন। আমি রোগীর কাগজপত্র দেখাই। তবুও ওই নার্স বাইরে বেরিয়ে যেতে বলেন। আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করছিলেন। তখন ডাক্তারকে ডাকতে যাই। তিনি এসেই আমাদের রোগীকে বর্ধমানে রেফার করে দেন।”
এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, যখন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পিঙ্কিকে ভর্তি করানোর জন্য ছোটাছুটি চলছে, তাঁর প্রসববেদনা বাড়তে শুরু করে। তাঁকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিশ্রামাগারে বসিয়ে রেখে পরিবারের সদস্যরা অ্যাম্বুল্যান্স ডাকতে গিয়েছিলেন। তখনই বিশ্রামাগারেই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন পিঙ্কি। তাঁর শাশুড়ির অভিযোগ, পুত্রবধূর প্রসব যন্ত্রণা বাড়তে শুরু করলেও স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে কোনও সহযোগিতা করা হয়নি। কোনও নার্স বা চিকিৎসক এগিয়ে আসেননি। শেষমেশ তাঁদের সঙ্গে আসা ধাত্রীর সহযোগিতায় সন্তান প্রসব করেন পিঙ্কি।