সিবিআইয়ের সঙ্গে সংঘাত স্পিকারের। ফাইল চিত্র।
সোমবার ভোরে সিবিআই গ্রেফতার করেছে বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে। কিন্তু সেই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে যাওয়ার পর তা অনুষ্ঠানিক ভাবে জানানো হয়েছে বিধানসভার সচিবালয় ও স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মঙ্গলবার বিকেল ৩টে নাগাদ সিবিআইয়ের এক কর্মী এসে বিধানসভার সচিবালয়ে বিধায়কের গ্রেফতারি সংক্রান্ত খবর লিখিত আকারে জমা দিয়ে যান। পরে সন্ধ্যায় নিজের সাংবাদিক বৈঠক করে ক্ষোভ উগরে দেন স্পিকার। তিনি বলেন, ‘‘বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে সোমবার ভোরবেলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। অথচ স্পিকার কিংবা বিধানসভা কাউকেই এ বিষয়ে অবগত করানো হয়নি। হয় আমাদের জানতে হয়েছে সংবাদমাধ্যম থেকে, কিংবা সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা আমাদের জানিয়েছেন।’’ এর পরেই ক্ষোভের সুরে বিমান বলেছেন, ‘‘আইনে বলা আছে, বিধানসভার কোনও সদস্যকে গ্রেফতার করার পর যত দ্রুত সম্ভব বিধানসভার স্পিকারকে জানাতে হবে। এ ক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টা পর আমাদের লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। আমরা এই ঘটনা বিধানসভাকে অবজ্ঞা বলে ধরছি। আমরা চিঠি দিয়ে সিবিআই আধিকারিকের কাছে জানতে চাইব, কেন এমনটা করা হচ্ছে।’’
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকারের সঙ্গে সিবিআই ও ইডির সংঘাত কোনও নতুন ঘটনা নয়। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পর নারদাকাণ্ডে ১৭ মে কলকাতার মেয়র তথা কলকাতা বন্দরের বিধায়ক ফিরহাদ হাকিম, কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র, প্রয়াত পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও বেহালা পূর্বের প্রাক্তন বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে সিবিআই। সে ক্ষেত্রেও বিধানসভার স্পিকার ও সচিবালয়কে অন্ধকারে রেখেই তা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। পর পর এমন ঘটনা ঘটায় প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান। বিধানসভাকে না জানিয়ে কী ভাবে বিধানসভার সদস্যদের গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। পাশাপাশি বার বার এমন ঘটনা ঘটায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) আধিকারিকদের বিধানসভায় তাঁর সামনে হাজির হতে বলেছিলেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে বিধানসভার সচিবালয়ের সঙ্গে দুই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার চিঠি চালাচালি হওয়ার পর সংঘাত থেমে গিয়েছিল। কিন্তু স্পিকারের সামনে হাজিরা দেননি সিবিআই বা ইডির কোনও আধিকারিক। কিন্তু এ বার বিধায়কের গ্রেফতারের পর একদিন কেটে যাওয়ার পর বিধানসভাকে সিবিআই সে খবর জানানোর পর্বে বেজায় ক্ষুব্ধ স্পিকার। তাই সিবিআইকে নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে উত্তর জানানোর কথা বলেছেন তিনি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিবিআই সন্তোষজনক উত্তর না দিলে আইনি পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্পিকার।