উপনির্বাচনে মানিকতলার বিজেপি প্রার্থী। ছবি: সংগৃহীত।
২০১৯ সালে যখন কৃষ্ণনগর লোকসভা আসনে তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন, তালিকায় নাম ছিল কল্যাণ চৌবে। ২০২১ সালে মানিকতলা বিধানসভা আসনে প্রার্থী হওয়ার সময়েও তা-ই ছিল। কিন্তু এ বার তিনি শুধু ‘চৌবে’ নন। সঙ্গে ‘ভট্টাচার্য’। সোমবার দুপুরে বিজেপির তরফে যে প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানেই উল্লেখ করা হয়েছে, মানিকতলার প্রার্থী কল্যাণ চৌবে ভট্টাচার্য।
তবে কি তিনি অন্য কেউ? বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে কৃষ্ণনগরে মহুয়া মৈত্রের কাছে কিংবা পরে মানিকতলায় প্রয়াত সাধন পাণ্ডের কাছে পরাজিত কল্যাণই এ বার মানিকতলায় প্রার্থী। এর পরে আনন্দবাজার অনলাইনের পক্ষে তাঁকে ফোন করলে জানা যায় পদবি বদলের কারণ। কল্যাণ জানান, আগে তিনি শুধুই তাঁর পিতার পদবি ‘চৌবে’ ব্যবহার করতেন। সম্প্রতি মায়ের পদবি ‘ভট্টাচার্য’ও ব্যবহার শুরু করেছেন। আর সেটা দলকে জানানোতেই জোড়া পদবি রয়েছে প্রার্থিতালিকায়। তবে এখনও ভোটার কার্ড, আধার কার্ডে কল্যাণ শুধু ‘চৌবে’ হয়েই রয়েছেন।
কল্যাণের পিতার নাম লক্ষ্মীনারায়ণ চৌবে। চৌবে পরিবারের আদি বাড়ি মুর্শিদাবাদে। পরে কলকাতায় আসেন তাঁরা। ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন গোলরক্ষক কল্যাণ শুধু বাবার পদবি ব্যবহার করলেও তাঁর মা সন্ধ্যা ভট্টাচার্য বরাবরই পৈতৃক পদবি ব্যবহার করে এসেছেন। তবে কল্যাণের স্ত্রী সোহিনী মিত্র চৌবে দুই পদবি লেখেন নামের পরে। পিতার মৃত্যুর পরে কল্যাণের মনে হয় মা-ই যখন একমাত্র অভিভাবক হয়ে গিয়েছেন, তাই তাঁর পদবিও ব্যবহার করা যাক। যদিও অনেকটা দেরিতে আসে সেই ভাবনা। কল্যাণ বলেন, ‘‘২০২০ সালে বাবার মৃত্যু হয়। এর পরেও আমি চৌবে পদবিই ব্যবহার করতাম। সম্প্রতি হঠাৎই মনে হয়, মায়ের পদবিও ব্যবহার করব। সেই থেকেই শুরু করে দিই।’’ একই সঙ্গে কল্যাণের দাবি, ‘‘আমরা সর্বত্র নারী সশক্তিকরণের কথা বলি। আর পদবি তো আসলে বংশ পরিচয়। আমার মনে হয়েছে, মায়ের পরিচয়ও নামের সঙ্গে বহন করা উচিত।’’
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে তাঁর পিতৃবিয়োগ হলেও তিনি ২০২১ সালের ভোটে শুধু চৌবে পদবি নিয়েই ভোটে লড়েছিলেন কল্যাণ। উপনির্বাচনে দল প্রার্থিতালিকায় কল্যাণের জোড়া পদবি উল্লেখ করলেও তা নিয়ে লড়তে পারবেন এখন অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি? কারণ, নিজে ব্যবহার করলেও ভোটার তালিকা-সহ সব নথিতেই এখনও শুধু পিতার পদবি চৌবে রয়ে গিয়েছে। নিজে মায়ের পরিচয় উল্লেখ করার সিদ্ধান্ত নিলেও তা এখনও খাতায়কলমে হয়নি। আদালতে পদবি বদলের হলফনামাও জমা দেননি। তাই দলের প্রার্থিতালিকায় ‘ভট্টাচার্য’ উল্লেখ থাকলেও এই ভোটের প্রচারেও কল্যাণকে ‘চৌবে’ হয়েই লড়তে হবে, না কি নির্বাচন কমিশনে গিয়ে তিনি পদবি বদল করবেন, তা নিয়ে কিছু বলেননি কল্যাণ।