BJP

ঘোষণা আছে প্রস্তুতি নেই! হাজার সভার পরিকল্পনা শোনালেও অথৈ জলে বিজেপির অগস্ট কর্মসূচি

দেশের সব সাংগঠনিক মণ্ডলে লোকসভা ভোটের একটি করে প্রস্তুতি সভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিজেপি। অন্য রাজ্যে জুন, জুলাইয়ে হয়ে গেলেও পঞ্চায়েত ভোটের জন্য এ রাজ্যে পারেনি বাংলার বিজেপি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২৩ ১০:০৪
Share:

সুকান্ত মজুমদার-শুভেন্দু অধিকারী। — ফাইল চিত্র।

অগস্টের দ্বিতীয় পক্ষে ১৫ দিনে এক হাজার সভা। এমনই কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল রাজ্য বিজেপি। বলা হয়েছিল, দলের এক হাজার সাংগঠনিক মণ্ডলে একটি করে সভা হবে। রাজ্যে দশটি বাছাই এলাকায় হবে বড় সভা, তিনটি মেগা সভা। কিন্তু কোথায় কী? অগস্টের ২২ তারিখ পর্যন্ত খানকয়েক মণ্ডলে সভা হলেও যে ব্যাপকতার ঘোষণা ছিল তার নামমাত্র নেই। যদিও বাংলায় এই কর্মসূচি সফল করতে হবে বলে নির্দেশ ছিল দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। রাজ্য বিজেপিরই এক নেতার বক্তব্য, পরিকল্পনা থাকলেও প্রস্তুতির অভাবেই এই কর্মসূচি শুরু করা যাচ্ছে না। তবে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্ভব না হলেও এক হাজার সভা হবে। মূলত ধূপগুড়ি বিধানসভা উপনির্বাচনের ব্যস্ততার জন্যই নাকি শুরু করা যাচ্ছে না ঘোষিত কর্মসূচি!

Advertisement

গোটা দেশে গত জুন থেকেই লোকসভা নির্বাচনের পুরোদস্তুর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। সেই লক্ষ্যে জুন ও জুলাই মিলিয়ে সব রাজ্যকেই প্রতিটি সাংগঠনিক মণ্ডলে একটি করে জনসভা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিজেপির সাংগঠনিক ভাগে জনসংখ্যা অনুসারে তিন বা চারটি করে মণ্ডল থাকে। সেই সব মণ্ডলে একটি করা সভা করা হবে বলে ঠিক হয়েছিল জুন ও জুলাই মাসের মধ্যে। ৩০ মে কর্মসূচি শুরু করে কয়েকটি সভাও হয়েছিল। ২ জুন করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পরে বিজেপি একটু ধীরে চলো নীতি নেয়। তার মধ্যেই ৮ জুন আচমকা রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় তা বন্ধ হয়ে যায়। অন্য দিকে, দেশের অন্য সব রাজ্যেই বিজেপি এই কর্মসূচি করে ফেলেছে। এর পরে বাংলাকে ঝড়ের গতিতে তা করে ফেলতে হবে বলে নির্দেশ দেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেই কর্মসূচি কি আদৌ করতে পারবে রাজ্য বিজেপি। সুকান্তের দাবি, ‘‘কর্মসূচি ঠিকই হয়ে যাবে। দলের প্রস্তুতিও রয়েছে। ধূপগুড়ি উপনির্বাচন পর্যন্ত আমি হয়তো সে ভাবে শুরু করতে পারব না। তবে বাকি নেতারা ইতিমধ্যেই হাজার সভার জন্য প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা করে ফেলেছেন।’’

পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে গত ৮ জুলাই ফল পর্যালোচনা ও পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করতে রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব একটি বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত ছাড়াও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্য দলের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সতীশ ধন্দ উপস্থিত ছিলেন। হাজির ছিলেন রাজ্যের দায়িত্ব পাওয়া চার কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল বনসল, মঙ্গল পাণ্ডে, অমিত মালবীয় এবং আশা লাকড়া। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানেই এই কর্মসূচি অগস্ট মাসের মধ্যে করে ফেলা হবে বলে ঠিক হয়। এর পরে দলের সল্টলেকের দফতরে রাজ্য নেতাদের নিয়ে একটি বৈঠকে শুভেন্দু ছাড়া শীর্ষ নেতারা সকলেই হাজির ছিলেন। বৈঠকে ছিলেন সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষও। কী ভাবে এই কর্মসূচি রূপায়ণ করা যেতে পারে, সেখানে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ঠিক হয়েছিল, লোকসভায় বাদল অধিবেশন শেষ হলেই শুরু হবে কর্মসূচি। ১১ অগস্ট অধিবেশন শেষে দলের সাংসদেরা রাজ্যে ফিরে এসেছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সে ভাবে শুরুই হয়নি হাজার সভার কর্মসূচি। যদিও জেলায় জেলায় নির্দেশ পাঠিয়ে সভার প্রস্তুতি নিতে বলা হয়। রাজ্য নেতারা যে সেই সব সভায় যাবেন তা জানানোর পাশাপাশি বলা হয়, প্রতিটি সভায় কমপক্ষে দু’হাজার মানুষের জমায়েত করতে হবে।

Advertisement

বাংলায় ২৯৪ আসন মিলিয়ে বিজেপির মোট মণ্ডলের সংখ্যা ১,২৬৩। ঠিক হয়েছিল, এর মধ্যে সংগঠন দুর্বল এমন ২৬৩টি মণ্ডলে সভা হবে না। বাকি এক হাজারটিতে দলের ১৬ জন সাংসদ এবং ৬৯ জন বিধায়কও অংশ নেবেন। অগস্টে শেষ করা তো সম্ভবই নয়, সেপ্টেম্বরেও তা করা যাবে কি না তা নিয়েই চিন্তা। ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পুজো এবং পরের দিন ১৮ সেপ্টেম্বর গণেশ চতুর্থী। ইদানীং, রাজ্যে গণেশ চতুর্থী থেকেই পুজোর আমেজ চলে আসে। ফলে সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে কর্মসূচি শেষ করে ফেলতে হবে। আবার ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিন থেকে ‘সেবা সপ্তাহ’ পালনের নির্দেশও রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement