বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
প্রশ্ন ভুল মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ বহাল রাখল কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। মঙ্গলবার বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, সিঙ্গল বেঞ্চ ২০১৪ সালের সব টেট প্রার্থীকে ছয় নম্বর করে দেওয়ার যে নির্দেশ দিয়েছিল, তাতে কোনও ভুল নেই।
২০১৪ সালের টেটে ছ’টি প্রশ্ন ভুল রয়েছে— এই অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। ২০১৮ সালে। তৎকালীন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন যাচাই করতে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে একটি কমিটি গঠন করেন। কমিটি জানায়, ছ’টি প্রশ্ন ভুল রয়েছে। এর পরে বিচারপতি চট্টোপাধ্যায় শুধুমাত্র যাঁরা ওই ভুল প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ‘নেগেটিভ মার্কিং’য়ের শিকার হয়েছেন, তাঁদের নম্বর দেওয়ার নির্দেশ দেন।
বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়ের ওই রায় চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা হয়। সেখানে সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, শুধু মামলাকারী নয়, ২০১৪ সালে যাঁরা টেট পরীক্ষা দিয়েছিলেন, সকল প্রার্থীকে ছয় নম্বর দিতে হবে। ওই সময় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসেও এ ধরনের অনেক মামলা ওঠে। তিনিও নির্দেশ দেন, ২০১৪ সালে যাঁরা টেট পরীক্ষা দিয়েছিলেন, সকলকে ছয় নম্বর দিতে হবে। এই ছয় নম্বর পাওয়ার ফলে অনেকেই টেটে উত্তীর্ণ হন, যাঁরা আগে হননি। গত জুলাই মাসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, এই ছয় নম্বর পাওয়ার ফলে যাঁরা টেট উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাঁরাও এ বার চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন। তিন মাসের মধ্যে ওই টেট উত্তীর্ণ ছয় নম্বর দিয়ে চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সুযোগ দিতে হবে।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত জানান, ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষা দিয়েছিলেন প্রায় ২০ লক্ষ জন। পাশ করেছিলেন এক লক্ষ ২৫ হাজার জন। পর্ষদ আদালতে জানিয়েছে, এত জনকে ৬ নম্বর করে দেওয়া কঠিন। মঙ্গলবার বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে ফেরত পাঠায়। জানায়, পর্ষদের নতুন বক্তব্য থাকলে তা সিঙ্গল বেঞ্চেই জানাতে পারবে।