himba tribe

অতিথিদের সঙ্গে স্ত্রীদের সঙ্গমে উৎসাহ দেন স্বামীরা! পরকীয়া, বহুবিবাহ খুবই স্বাভাবিক যে গোষ্ঠীতে

‘ওকুজেপিসা ওমুকাজেন্দু’, যার সহজ অর্থ অতিথির কাছে স্ত্রীকে অর্পণ করে দেওয়া। অতিথিকে তুষ্ট রাখার জন্য সেই গোষ্ঠীর পুরুষেরা নিজের স্ত্রীদের অতিথিদের সঙ্গে যৌন মিলনের জন্য উৎসাহিত করেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:০১
Share:
০১ ১৮

গভীর রহস্যে ভরা মহাদেশ আফ্রিকা। এখানে রয়েছে অসংখ্য ছোট ছোট দেশ ও সেখানকার আদিম জনগোষ্ঠী। তাদের সংস্কৃতির সঙ্গে এশিয়া বা পশ্চিমি দুনিয়ার সংস্কৃতি আকাশ-পাতাল ফারাক। আধুনিক সমাজের কাছে তাদের একাধিক রীতিনীতি এবং নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি অস্বাভাবিক বলে গণ্য হবে। অথচ এগুলিই তথাকথিত ‘অসভ্য’ আদিবাসী যাযাবর আদিম গোষ্ঠীর কাছে একেবারে স্বাভাবিক ও সামাজিক ভাবে স্বীকৃত।

০২ ১৮

সেই রকমই একটি উপজাতি হিম্বা। এদের বাসস্থান নামিবিয়ায়। শেষ আধা-যাযাবর উপজাতি বলে বিশ্বের কাছে পরিচিত এরা। মূলত নামিব মরুভূমিতেই বসবাস করেন এই উপজাতির মানুষেরা। জীবনযাত্রা যেমন বৈচিত্রে ভরা, তেমনই যৌনতা নিয়েও তাঁদের রীতিনীতি খুবই অদ্ভুত।

Advertisement
০৩ ১৮

ভারতে আগত অতিথিদের দেবতা হিসাবে ধরা হয়। তাঁদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য বিশেষ নজর দেওয়া হয়ে থাকে। উত্তর নামিবিয়ার কুনেনে বাস করা হিম্বা উপজাতির মানুষও অতিথিবৎসল। বরং একটু বেশিই, যা আধুনিক সমাজের মানুষ স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারবেন না।

০৪ ১৮

‘ওকুজেপিসা ওমুকাজেন্দু’, যার সহজ অর্থ অতিথির কাছে স্ত্রীকে অর্পণ করে দেওয়া। অতিথিকে তুষ্ট রাখার জন্য সেই গোষ্ঠীর পুরুষেরা নিজের স্ত্রীদের অতিথিদের সঙ্গে যৌন মিলনের জন্য উৎসাহিত করেন। আর এই প্রথা চলে আসছে যুগের পর যুগ ধরে। যৌনতা নিয়ে ছুতমার্গ নেই এই জনগোষ্ঠীর।

০৫ ১৮

স্বামীদের সম্মতিতেই এই উপজাতির বিবাহিত মহিলারা পর্যটক বা ঘুরতে আসা অতিথিদের সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হন। যৌন মিলনের জন্য নিজের স্ত্রীদের পর্যটকদের হাতে তুলে দেওয়াকে আতিথেয়তার পরাকাষ্ঠা হিসাবে বিবেচিত করা হয় হিম্বা সমাজে।

০৬ ১৮

হিম্বাদের মধ্যে নেই কোনও যৌন ঈর্ষা। স্ত্রী অন্য কারও সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত হতে পারেন এই সন্দেহ থেকে পুরোপুরি মুক্তমনা এখানকার প্রত্যেক পুরুষ। নিজেদের প্রাচীন রীতি থেকে পোশাক, আচার-আচরণ সবই চলে আসছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে। নামিবিয়ার হিম্বা উপজাতির মানুষ এখনও আঁকড়ে রয়েছেন নিজেদের সংস্কৃতি।

০৭ ১৮

স্ত্রী অদলবদল করার মতো সংস্কৃতি গোটা পৃথিবীতে বাঁকা নজরে দেখা হলেও এই প্রথাটি হিম্বা জনগণের মধ্যে বহু শতাব্দী ধরে বিদ্যমান। পুরুষেরা তাঁদের স্ত্রীদের অচেনা পুরুষদের সঙ্গে রাত কাটাতে দেওয়ার মধ্যে কোনও দোষ খুঁজে পান না।

০৮ ১৮

হিম্বা উপজাতির পুরুষদের একাধিক স্ত্রী থাকাও খুবই সাধারণ ব্যাপার। প্রত্যেক মহিলাই সতীনের সঙ্গে সংসার করেন। স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে নতুন বৌ ঘরে আনলে তাঁকে সাদরে বরণ করে নেন প্রথম স্ত্রী। একই ভাবে পুরুষেরাও অন্য পুরুষের সঙ্গে মিলনে বাধা দেন না স্ত্রীদের।

০৯ ১৮

একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, হিম্বা পুরুষদের ৭০ শতাংশেরও বেশি এমন এক সন্তানকে লালন-পালন করেন, যার জন্মদাতা পিতা অন্য পুরুষ। এই উপজাতিতে, বিয়ের বাইরে জন্ম বা বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ককে খোলা মনেই মেনে নেওয়ার রীতি রয়েছে। স্ত্রীর সঙ্গে কোনও অপরিচিত ব্যক্তি বা অতিথি ঘরে রাত কাটালে ঘরের বাইরে স্বামীর রাত কাটানোও সেখানকার সুপ্রাচীন রীতি।

১০ ১৮

কোনও মহিলা অতিথির সঙ্গে মিলনে না-ও রাজি হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে শারীরিক ভাবে স্পর্শ না করে তাঁকে অতিথির ঘরে রাত কাটাতে হবে। বিবাহবিচ্ছেদ হিম্বা মহিলাদের জন্য খুব সহজ এবং একেবারেই অস্বাভাবিক নয়।

১১ ১৮

হিম্বা উপজাতির বিয়ের রীতিও অত্যন্ত প্রথাগত এবং ঐতিহ্যবাহী, যা তাদের সমাজের সংস্কৃতি ও জীবনের অঙ্গ। হিম্বা সমাজে বিয়ের আগে বর ও কনের পরিবারের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। সাধারণত, পুরুষকে তাঁর বাগ্‌‌‌‌‌দত্তার পরিবারকে কিছু গবাদি পশু (গরু বা ছাগল) প্রদান করতে হয়, যা পুরুষের সামাজিক অবস্থান এবং পরিবারের ক্ষমতা চিহ্নিত করে।

১২ ১৮

কুনেনে হিম্বা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বাস করেন। মূলত পশুপালন করেই কাটান এঁরা। জীবনযাপনের জন্য কৃষিনির্ভর হলেও গবাদি পশু পালন তাঁদের জীবিকার প্রধান উৎস। পশুপালন, রান্না করা, ঘর গোছানো এবং শিশুদের যত্ন নেওয়ার মতো গৃহস্থালির কাজ করে থাকেন পরিবারের মহিলারাই।

১৩ ১৮

হিম্বা মহিলারা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরেন। রেড আয়রন অক্সাইড, পশুর চর্বি দিয়ে তৈরি এক প্রকার প্রলেপ দিয়ে নিজেদের ত্বক এবং চুল রঙিন করে রাখেন তাঁরা। এই প্রলেপ তাঁদের ত্বককে রক্ষা করে, আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং সুরক্ষিত রাখে।

১৪ ১৮

জলের অভাবে হিম্বা মহিলারা স্নান করতে অভ্যস্ত নন। শোনা যায় বিয়ের সময় এক বারই স্নান করেন তাঁরা। পরিষ্কার থাকার জন্য আগুনের ধোঁয়ার মধ্যে মোটা পশমের বস্ত্র জড়িয়ে বসে থাকেন মহিলারা। এতে ঘামের মাধ্যমে দেহ থেকে ময়লা বেরিয়ে যায়।

১৫ ১৮

হিম্বা মহিলাদের গহনা তাঁদের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মহিলারা নিজেদের গহনা এবং সাজসজ্জা দিয়ে তাঁদের ঐতিহ্য, শ্রেণি, এবং সামাজিক অবস্থান প্রকাশ করেন।

১৬ ১৮

হিম্বা মহিলারা কাঠ, চামড়া, এবং ধাতু দিয়ে তৈরি ব্রেসলেট পরেন। এই ব্রেসলেটগুলো প্রায়শই বিশেষ নকশায় সাজানো হয় এবং একটি সামাজিক প্রতীক হিসাবেও ব্যবহৃত হয়। অলঙ্কারের মধ্যে গলার হারের উপস্থিতি দেখা যায়, যা চামড়া, রঙিন পাথর দিয়ে তৈরি হয়। এগুলো তাঁদের সাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং ঐতিহ্যবাহী নকশায় তৈরি হয়।

১৭ ১৮

নামিবিয়ার বাকি সমাজ থেকে তুলনামূলক ভাবে বিচ্ছিন্ন হিম্বারা। পশ্চিমি সভ্যতার আলোয় ধীরে ধীরে শহুরে জীবনে অভ্যস্ত হচ্ছেন হিম্বাদের নয়া প্রজন্ম। প্রযুক্তির ব্যবহার, শিক্ষা, জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং বিশ্বায়নের প্রভাব পড়ছে হিম্বাদের উপরেও।

১৮ ১৮

বিদেশি পর্যটকদের আগমন, যাঁরা হিম্বাদের সংস্কৃতি দেখতে আসেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগের ফলে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে হিম্বাদের তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও।

সব ছবি : সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement