রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভাই স্বরূপ বিশ্বাস। —ফাইল চিত্র।
‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’র কারণেই তাঁর বাড়িতে আয়কর বিভাগের আধিকারিকেরা তল্লাশি চালাতে এসেছিলেন, দাবি করলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভাই স্বরূপ বিশ্বাস। তবে তিনি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যেরা আধিকারিকদের সঙ্গে সহযোগিতা করেছেন বলে জানিয়েছেন স্বরূপ।
প্রায় ৭০ ঘণ্টা স্বরূপের নিউ আলিপুরের সাহাপুর কলোনির ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় আয়কর সংস্থা। বুধবার সকাল ৭টায় ফ্ল্যাটে ঢুকেছিলেন আয়কর কর্তারা। তার পর থেকে টানা তল্লাশি চলেছে। শনিবার ভোর পৌনে ৫টা নাগাদ আইটি টিম স্বরূপের ফ্ল্যাট ছেড়ে বেরিয়ে যায়। সূত্রের খবর, ফ্ল্যাট থেকে বেশ কিছু নথিপত্র নিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। ১৫ দিনের মধ্যে আরও কিছু নথি নিয়ে স্বরূপকে হাজিরা দিতেও বলা হয়েছে আয়কর অফিসে।
স্বরূপ জানিয়েছেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ চরিতার্থ করতেই ওই তল্লাশি। শনিবার সকালে তিনি বলেন, ‘‘এটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার হানা। আমরা তৃণমূল করি। তাই আমাদের এ ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। তবে এ ভাবে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল করি। আয়করের তদন্তে আমরা পূর্ণ সহযোগিতা করেছি। যা যা আমাকে ওঁরা জিজ্ঞেস করেছিলেন, সব উত্তর দিয়েছি। প্রয়োজনে আবার বলব। আগামী দিনেও তদন্তে সহযোগিতা করব। বাড়ি থেকে কিছু নিয়ে যাননি ওঁরা। যে ব্রিফকেস নিয়ে এসেছিলেন, তা নিয়েই চলে গিয়েছেন।’’
দীর্ঘ তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর স্বরূপ এবং তাঁর কাউন্সিলর স্ত্রী জুঁই বিশ্বাসকে দৃশ্যতই বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আমাদের কাছে যা দেখতে চেয়েছিল, দিয়েছি। কিছু নথি চেয়েছিলেন। ভোর ৫টায় তো কারও কাছে নথি তৈরি থাকে না। আমরা কিছুটা সময় চেয়েছি। ওঁরা পরে গিয়ে দিয়ে আসতে বলেছেন। তা-ই করব।’’ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কথা বলেছেন জুঁইও। তিনি বলেন, ‘‘অবশ্যই এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। গত চার থেকে পাঁচ বছরে কোন বিজেপি নেতার বাড়িতে কেন্দ্রীয় সংস্থার তল্লাশি হয়েছে? ভোট ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। এর মাঝে এ সব করে আমাদের দু’দিন নষ্ট করে দেওয়া হল। ইতিমধ্যে দুই বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসলে মোদী সরকার ভয় পাচ্ছে।’’
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, কয়েকটি রিয়্যাল এস্টেট সংস্থার আর্থিক অনিয়ম সংক্রান্ত বিষয়ে স্বরূপের বাড়িতে এই তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে রাজ্যের শাসকদলের যে যে নেতার বাড়িতে কেন্দ্রীয় সংস্থার তল্লাশি চলেছে, তার মধ্যে স্বরূপের বাড়ির তল্লাশিই দীর্ঘতম। এর আগে নিয়োগ ‘দুর্নীতি’ মামলায় বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে টানা ৬৫ ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। তার পর তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়। স্বরূপের বাড়ির তল্লাশি সেই নজিরকে ছাপিয়ে গিয়েছে।