শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
রামমন্দির উদ্বোধনের দিন তৃণমূলের ‘সংহতি মিছিল’ নিয়ে আপত্তি কেন? শুভেন্দু অধিকারীর করা মামলায় বৃহস্পতিবার এই প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্ট। এ দিন হাই কোর্টে মামলাটি নিয়ে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন শুভেন্দুর আইনজীবী সৌম্য মজুমদার। তিনি প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে জানান যে, আগামী ২২ জানুয়ারি (সোমবার) রাজ্যের সমস্ত ব্লকে সংহতি মিছিলের কর্মসূচি নিয়েছে শাসকদল।
প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, মিছিল এখানে কোনও নতুন বিষয় নয়। তখন শুভেন্দুর আইনজীবী বলেন, “অশান্তি এড়াতে ওই দিন দেশের তিনটি শহরে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শাসকদল সমস্ত ধর্মের মানুষকে নিয়ে রাজ্যজুড়ে ওই মিছিল হওয়ার কথা জানানো হয়েছে। এর ফলে অশান্তি হতে পারে।” তখন প্রধান বিচারপতি রাজ্যের বিরোধী দলনেতার আইনজীবীর কাছে জানতে চান, ওই কর্মসূচিতে অসুবিধা কী রয়েছে? তখন শুভেন্দুর আইনজীবী বলেন, “রাজ্যে অশান্তি তৈরি হতে পারে। রামনবমী এবং হনুমান জয়ন্তীতে রাজ্যের কয়েকটি এলাকায় অশান্তি হয়েছিল। তাই ওই দিন মিছিল কর্মসূচি বন্ধ করা হোক। অন্য কোনও দিন কর্মসূচি করুক শাসকদল। অথবা কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিক আদালত।” তাঁর প্রশ্ন, নির্দেশিকা অনুযায়ী কোনও কর্মসূচি করতে গেলে ২ সপ্তাহ আগে পুলিশের অনুমতি নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে শাসকদল ১৬ জানুয়ারি কর্মসূচির করার কথা জানিয়েছে। তারা কি ওই নির্দেশিকা মেনেছে?
প্রধান বিচারপতি তখন তৃণমূলের কর্মসূচি নিয়ে আপত্তি কেন, তা জানতে চান। শুভেন্দুর আইনজীবী জানান, সারা রাজ্যজুড়ে ওই কর্মসূচি নিয়েছে শাসকদল। ফলে অশান্তির আশঙ্কা রয়েছে। প্রধান বিচারপতি তখন বলেন, “সে ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ করা যেতে পারে। কর্মসূচি থেকে কোনও প্ররোচনা বা ঘৃণাভাষণ করা যাবে না এ সব বলতে পারি।” প্রধান বিচারপতির আরও সংযোজন, “ঠিক আছে, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি)কে মামলাটি সম্পর্কে জানানো হোক।” প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারই মামলাটি শুনবে তারা।
অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনের দিন অর্থাৎ, আগামী সোমবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ‘সংহতি মিছিল’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন, তা পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি, আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে ওই দিন রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার আর্জিও জানান বিরোধী দলনেতা। আদালতে শুভেন্দুর যুক্তি ছিল, এর আগেও বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হয়েছে। তাই রামমন্দিরের উদ্বোধনের দিন অর্থাৎ, ২২ জানুয়ারি কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, তাই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার প্রয়োজন রয়েছে। ওই একই কারণে মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচিও পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানান তিনি।