বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। — ফাইল চিত্র।
দিলীপ ঘোষ আর বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি নন। এখন শুধুই সাংসদ। শনিবার সকালে বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির রদবদলের পরে দেখা গিয়েছে সেখানে বাংলার প্রতিনিধি রইলেন শুধু অনুপম হাজরা। দিলীপকে সরানোর যুক্তি হিসাবে বিজেপি বলছে, আগামী লোকসভা নির্বাচনে লড়াইকে গুরুত্ব দিতেই সাংসদদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে রাখা হয়নি। আর এখানেই প্রশ্ন উঠেছে ২০১৯ সালে যাদবপুর আসন থেকে বিজেপির টিকিটে লড়াই করা অনুপম কি তবে ২০২৪ সালে টিকিট পাবেন?
এমন জল্পনা বিজেপির অন্দরে। তবে একাংশ বলছেন, যে নীতিতে দিলীপকে সরানো হয়েছে তা হল, যাঁরা সাংসদ রয়েছেন তাঁদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে রাখা হবে না। কিন্তু এটা কোথাও বলা নেই যে, যাঁরা কেন্দ্রীয় কমিটিতে রয়েছেন তাঁদের সাংসদ করা যাবে না। সেই সুর অনুপমের মুখেও। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির সংবিধানে কোথাও লেখা নেই যে সর্বভারতীয় দায়িত্বে থাকলে লোকসভা নির্বাচনে লড়া যাবে না। আমি বার তিনেক দলীয় সংবিধান পড়েছি। আমি অন্তত তেমন কিছু বলা রয়েছে দেখিনি।’’ তাঁকে পুরনো পদে রেখে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানিয়ে শনিবার একটি টুইটও করেছেন অনুপম।
অনুপমের দাবি অবশ্য উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। অতীতেও অনেক কেন্দ্রীয় নেতাই লোকসভা বা রাজ্যসভায় প্রার্থী হয়েছেন। শনিবারের রদবদলের পরেও বেশ কয়েক জন সাংসদ রয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় কমিটিতে। নতুন করে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে তেলঙ্গানার সাংসদ সঞ্জয় বন্দিকে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে বোলপুর আসন থেকে তৃণমূল সাংসদ হিসাবে লোকসভায় যান অনুপম। কিন্তু ২০১৯ সালের গোড়াতেই তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। সেই সময়ে দলবিরোধী মন্তব্য এবং সমাজমাধ্যমে পোস্ট করার অভিযোগ ছিল অনুপমের বিরুদ্ধে। তৃণমূলে থাকার সময়ে মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ হিসাবেই পরিচিত ছিলেন অনুপম। মুকুল বিজেপিতে যাওয়ার পরে তিনি একই পথে ২০১৯ সালের মার্চে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন। ২০১৯ সালে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থীও করে বিজেপি। কিন্তু তৃণমূলের অভিনেত্রী সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর কাছে পরাজিত হন। গত বিধানসভা নির্বাচনে অবশ্য অনুপমকে আর প্রার্থী করেনি বিজেপি। তবে নির্বাচনের আগে আগেই ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে অনুপমকে সর্বভারতীয় সম্পাদক করে বিজেপি। তখন থেকেই রাজ্য বিজেপিতে বিশেষ গুরুত্ব নেই অনুপমের। কেন্দ্রীয় নেতারাও তাঁকে অন্য রাজ্যের দায়িত্বে পাঠান। তিনি এখন বিহার বিজেপির সহ-পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব রয়েছেন।