পার্থ চট্টোপাধ্যায়
কবি শঙ্খ ঘোষের একটি কবিতা নিয়ে বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের কটাক্ষকে কার্যত অনুমোদন করল তাঁর দল। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় শুক্রবার জানিয়ে দিলেন, ‘ব্যক্তি আক্রমণ’ করে শঙ্খবাবু ঠিক করেননি। আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কারও নাম না করেই বলেছেন, ‘‘কিছু আঁতেলদের দেখা যায়, হঠাৎ করে কলম ধরেন।’’
শঙ্খবাবু তাঁর ‘মুক্ত গণতন্ত্র’ কবিতায় লিখেছেন, ‘দেখ্ খুলে তোর তিন নয়ন, রাস্তা জুড়ে খড়গ হাতে দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন’। তারই প্রতিক্রিয়ায় অনুব্রত প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথ-নজরুলের পরে এ আবার কোন কবি? তিনি শঙ্খের নাম অপমান করেছেন।’’ তার জেরে সর্বত্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কলকাতা প্রেস ক্লাবে পঞ্চায়েত ভোট উপলক্ষে এ দিন ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে প্রশ্নের জবাবে পার্থবাবু বলেন, ‘‘আমরা কাউকেই অনুমোদন করি না। কাউকে আঘাত করা কারও ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য হতে পারে না। শঙ্খবাবু শ্রদ্ধেয় কবি। কিন্তু তিনি যেটা বলেছেন, সেটা ব্যক্তিকে আক্রমণ।’’ অনুব্রতের উন্নয়ন সংক্রান্ত মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই যে হেতু কবিতা, তাই তাকে ‘ব্যক্তি আক্রমণ’ বলেই অভিহিত করছে তৃণমূল। শাসক দলের মহাসচিবের আরও ব্যাখ্যা, সাংবাদিকেরা যে কোনও বিষয়ে অনুব্রতের মতামত চাইতে যান বলেই বীরভূমের ওই নেতা ‘লোভ’ সামলাতে পারেন না! নন্দীগ্রাম-পর্বে তৎকালীন শাসকের ভূমিকার বিরুদ্ধে কলম ধরেছিলেন শঙ্খবাবু। পার্থবাবুর মতে, দু’টো আলাদা বিষয়।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন একটি বৈদ্যুতিন চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘সকলকে বিদ্বজ্জন বলে মানা যায় না।’’ আবার তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ, ‘গানওলা’ কবীর সুমন লিখেছেন— ‘‘এঁরা হলেন কাব্যপিতা, এঁদের পায়ে দেশের মন / অনুব্রত আপনি নেহাত গাঁয়ের মানুষ, কিছুই নন’। আর বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুর বক্তব্য, ‘‘শঙ্খবাবুকে নিয়ে এমন কটাক্ষ, বিতর্ক সভ্য জগতে কেউ মেনে নিতে পারেন বলে বিশ্বাস করি না!’’