অনুষ্ঠানের প্রশ্ন উত্তর পর্বে বিশেষজ্ঞরা। নিজস্ব চিত্র।
প্যাস্কালের সূত্র কিংবা নিউটনের গতিসূত্র কী? কিংবা কেমন করে জলের মধ্যে থাকা বস্তু পুরোপুরি ডুবে যায় না? বিজ্ঞানের এমন অনেক মজাদার কিন্তু কঠিন প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য টিভির সাদাকালো পর্দায় চোখ থাকত এক সময়ে। তবে, পর্দার ও পারে এই সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হত মজার মজার খেলার ছলে। এমনকি, এ-ও বলে দেওয়া হত, এই সবই রোজের প্রতিটি কাজে কী ভাবে জড়িয়ে রয়েছে। সেই মজার অনুষ্ঠানই নতুন মোড়কে ফিরিয়ে আনছে ডিডি বাংলা।
আশির দশকে শুরু হওয়া বিজ্ঞান নির্ভর ক্যুইজ় শো ‘কোয়েস্ট’ কোনও বিনোদনমূলক ধারাবাহিকের তুলনায় কম জনপ্রিয় ছিল না। দূরদর্শন কলকাতার এই অনুষ্ঠানে অংশ নিত রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাই।
দর্শকদের অনুরোধে বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজ়িয়াম (বিআইটিএম) এবং ডিডি বাংলার যৌথ উদ্যোগে দীর্ঘ দু’দশক পরে আরও এক বার শুরু হবে এই অনুষ্ঠান। ‘কোয়েস্ট ৩.০’ এই নতুন নামের ক্যুইজ় শো-তে বিআইটিএম কলকাতা এবং জেলার বিজ্ঞান কেন্দ্রের তরফে প্রাথমিক ভাবে নির্বাচিত রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়ারা অংশগ্রহণ করবে।
অংশগ্রহণকারীদের বিষয় বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে । নিজস্ব চিত্র।
মোট ১৩টি পর্বে সম্প্রচার করা হবে এই অনুষ্ঠান, প্রতিটি পর্বে দর্শকদেরও জন্য থাকছে প্রশ্ন। সম্প্রচার শুরু হবে ১৮ নভেম্বর। ডিডি বাংলায় প্রতি সোমবার রাত ৯টা ৫ মিনিট এবং মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ২ মিনিট থেকে দর্শকরা অনুষ্ঠানটি দেখতে পারবেন।
উল্লেখ্য, স্কুল পড়ুয়াদের হাতেকলমে বিজ্ঞানের খুঁটিনাটি বিষয় শেখাতে ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ সায়েন্স মিউজিয়াম অধীনস্থ বিআইটিএম-এর তরফে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পরিচালনা করা হয়ে থাকে।
এই বিষয়ে প্রসার ভারতী পূর্বাঞ্চলের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল রাজীব ভট্টাচার্য বলেন, “বিজ্ঞানকে খাতা কলমের নীরস গণ্ডি থেকে বের করে তা সাধারণ মানুষ, বিশেষত ছাত্রছাত্রীদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলাই দূরদর্শনের অন্যতম লক্ষ্য। আমার আশা ‘কোয়েস্ট ৩.০’ দর্শকদের সেই চাহিদা পূরণ করতে পারবে।”
(উপরে) প্রশ্নের উত্তর নিয়ে চিন্তিত অংশগ্রহণকারীরা। (নিচে) বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন সঞ্চালক। নিজস্ব চিত্র।
জার্মান টেলিভিশনের এক জনপ্রিয় শো-এর আদলে তৈরি হওয়া এই ক্যুইজ় প্রতিযোগিতাটির অনুষ্ঠান পরিচালনা করতেন বিআইটিএম, কলকাতার প্রাক্তন অধিকর্তা সমর বাগচি এবং বিজ্ঞানী তথা লেখক পার্থ ঘোষ। দূরদর্শন কলকাতার এই উদ্যোগই ছিল প্রথম প্রয়াস, তাই কিছু দিনের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল ‘কোয়েস্ট’। ১৯৮৯ সালে এই অনুষ্ঠানের জন্য ইউনেস্কোর তরফ থেকে বিশেষ পুরস্কারও পায় দূরদর্শন। নব্বইয়ের দশকেও ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ সায়েন্স মিউজিয়ামের সহায়তায় ‘কোয়েস্ট’-এর আরও কয়েকটি পর্ব তৈরি হয়েছিল।
দু’দশক পরে আরও এক বার ফিরিয়ে আনা হচ্ছে এই অনুষ্ঠান। ‘কোয়েস্ট ৩.০’ বর্তমান প্রজন্মের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে, এখন সেটাই দেখার।