প্রতীকী ছবি।
কোভিড আবহে পুরভোট স্থগিত হবে কি না তা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপরই ছেড়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, করোনা পরিস্থিতি ভোট করানো যায় কি না, তা ভাবনাচিন্তা করুক কমিশন। কমিশন কী সিদ্ধান্ত নিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মামলকারীদের তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। পাশাপাশি, রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে হাই কোর্ট কমিশনকে পরামর্শ দিয়েছে, বর্তমান আবহে ভোট চার থেকে ছ’সপ্তাহ পিছনো যায় কি না, তা বিবেচনা করে দেখতে।
তবে শুক্রবারের রায়ে হাই কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ভোট করানো বা ভোট স্থগিতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কমিশনকেই। তারাই ‘স্বাধীন ভাবে’ বিবেচনা করবে এই পরিস্থিতিতে ভোট করানো ঠিক কি না। অন্য দিকে, আদালত এই মামলাটিকে নিষ্পত্তি করে দেয়। ফলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমিশন কী সিদ্ধান্ত নিল তা শুধু মামলকারীকে জানালেই হবে। ওই বিষয়ে আদালতে অবহিত করার প্রয়োজন নেই।
শিলিগুড়ি, আসানসোল, চন্দননগর এবং বিধাননগরে পুরভোট পিছনোর আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন সমাজকর্মী বিমল ভট্টাচার্য। আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য শুনানিতে জানিয়েছিলেন, রাজ্যের ওই চার পুরনিগমের মেয়াদ আগেই শেষ হয়েছে, রাজ্য সরকার নিযুক্ত প্রশাসকেরা কাজ চালাচ্ছেন। ফলে এখন ভোট না হলেও সাংবিধানিক সঙ্কটের প্রশ্ন নেই।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে হয় শুনানি। ওই শুনানিতে পুরভোট স্থগিত করার ক্ষমতা কার রয়েছে এ নিয়ে তরজা বেঁধে যায় রাজ্য ও কমিশনের মধ্যে। রাজ্য জানায়, নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে কমিশনই শেষ সিদ্ধান্ত নেবে। আবার কমিশন জানায়, দু'পক্ষের আলোচনার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে শুক্রবারের রায়ে অবশ্য সেই সিদ্ধান্ত কমিশনের উপরই ছেড়েছে হাই কোর্ট।
হাই কোর্ট সম্প্রতি রাজ্যের মতে সায় দিয়ে গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজনে ছাড়পত্র দিয়েছে। মামলাকারীর আর এক আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তিথি-নক্ষত্র ধরে নির্ঘণ্ট মেনে সাগরমেলার আয়োজন করতে হয়। পুরভোটের ক্ষেত্রে এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। তা ছাড়া, সাগরমেলার আয়োজনের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার কঠোর ভাবে কোভিডবিধি মেনে চালার প্রতিশ্রুতি দিলেও পুরভোটের প্রচারের ক্ষেত্রে কোনও রাজনৈতিক দলই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কোভিড সংক্রান্ত নির্দেশিকা মেনে চলছে না। এর পর রাজ্যের কাছে করোনা পরিস্থিতির তথ্যও নিয়েছিল হাই কোর্ট।