এএফপি-র তোলা প্রতীকী ছবি।
কারও মুখে মাস্ক আঁটা। কেউ বা এক টুকরো কাপড় বা গামছায় নাকমুখ ঢেকে নিয়েছেন। ব্যাগপত্রের লটবহরে হাতে বা কাঁধে বইতে না-পেরে মাথায় চাপিয়ে হেঁটে চলেছেন। শুক্রবার, শ্রমিক দিবসের দুপুরের ছবি। একটি ভিডিয়োয় লকডাউনের দিনকালে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জে এ রাজ্যের কয়েক জন শ্রমিকের পথ চলার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। মুর্শিদাবাদ-বীরভূমের ওই শ্রমিকদের দাবি, ময়ূরভঞ্জের আশ্রয়শিবির থেকে তাঁদের এ দিনই বার করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সীমানা পর্যন্তও তাঁরা পৌঁছতে পারেননি। পশ্চিমবঙ্গে ঢোকা কিংবা ওড়িশায় থেকে যাওয়া, দু’দিক নিয়েই তাঁরা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন।
ভিন্ রাজ্যে আটক শ্রমিকদের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের নোডাল অফিসার পিবি সেলিমের দাবি, ‘‘দুই রাজ্য সরকারের মধ্যে কোনও রকম সমন্বয় ছাড়া শ্রমিকদের আশ্রয় শিবির থেকে বার করার কথা নয়। এ রাজ্যেও কয়েক হাজার ভিন্ রাজ্যের শ্রমিক রয়েছেন। তাঁদের দেখভাল করা স্থানীয় প্রশাসনেরই দায়িত্ব।’’ ময়ূরভঞ্জের বিধায়ক রাজকিশোর দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওই শ্রমিকেরা যদি লকডাউনের আগে ময়ূরভঞ্জ জেলায় কর্মরত থাকেন, তবে তাঁদের অবশ্যই আমরা দেখভাল করব।’’ শ্রমিকদের মধ্যে শেখ রেজাউল বলে এক প্রৌঢ়ের সঙ্গে এ দিন বিকেলে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন, তাঁরা মোট ৩১ জন রয়েছেন। বেশির ভাগই মুর্শিদাবাদের লালগোলা, ভগবানগোলার। বীরভূমের রামপুরহাট এলাকার জনা পাঁচেক রয়েছেন। রাজমিস্ত্রির কাজ ছাড়াও কয়েক জন ফেরিওয়ালার কাজ করতেন। জলঙ্গির বাসিন্দা ৫৩ বছরের রেজাউল কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘আমাদের বলে দেওয়া হয়েছিল ৩ মে-র আগে চলে যেতে হবে। এর পরে আজ দুপুরেই বের করে পশ্চিমবঙ্গে চলে যেতে বলা হল।’’ পশ্চিমবঙ্গের গোপীবল্লভপুর সীমানায় ঢোকার কয়েক কিলোমিটার আগেই সম্ভবত ওড়িশা পুলিশই তাঁদের পথ আটকায়। বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে জেলা প্রশাসনের কাছেও নির্দিষ্ট খবর আসেনি। একটি গণ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত বীরভূমের পরিচিত এক কলেজ শিক্ষক সামিরুল ইসলামের নম্বরে যোগাযোগ করেন রেজাউলরা। তার পরেই তাঁদের বিষয়টি জানাজানি হয়।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)