ছবি: পিটিআই।
কেন্দ্রের আর্থিক ঘোষণার বাস্তবিক দিকটিকে অশ্বডিম্বের সঙ্গে তুলনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চার দিন ধরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের ঘোষণা রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি শোধরাতে পারবে না বলেই দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, গরিব মানুষের স্বার্থ রক্ষায় কেন্দ্রের চাপানো শর্ত মানতে প্রস্তুত নয় পশ্চিমবঙ্গ।
রাজ্যের দাবি, চলতি পরিস্থিতিতে বিপুল পরিমাণ রাজস্বের ক্ষতি হচ্ছে। তার উপরে বিপুল খরচের বোঝা। ফলে কেন্দ্রের তরফে আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণার আশা করেছিল রাজ্য। কিন্তু তার পরিবর্তে কেন্দ্র যা ঘোষণা করেছে, মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘চার দিন ধরে আপনারা অনেক রসগোল্লা, রাজভোগ, বিরিয়ানি, বোঁদে, মিহিদানা দেখলেন। চার দিনে চারটে জ়িরো। রাজভোগ, রসগোল্লা কিছু নেই। না আছে জিলিপি, আছে শুধু কাঁচকলা। পুরোটাই মিথ্যা। বাংলাকে বঞ্চনা করা নিত্য ব্যাপার হয়ে গিয়েছে। সব রাজ্যকে সলিডারিটি জানাচ্ছে, এ রাজ্যকেও তো জানাতে পারে।’’
রাজ্য সরকার মনে করছে, কেন্দ্রের ঘোষণার পুরো সুবিধা পেতে গেলে তাদের স্থির করে দেওয়া শর্ত মেনে নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে কার্যত ভেঙে পড়বে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো। ফলে সাধারণ মানুষের উপর কর বসানো, কেন্দ্রের কথা মতো গণবন্টন ব্যবস্থা তৈরিতে সায় দেবে না রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘যদি বলে তোমার বিদ্যুৎ নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেব, রাজ্যের হাতে কিছু থাকবে না- এতে আমি সায় দিতে পারব না। ওরকম টাকা চাই না। আবার পুর এলাকায় কর বাড়াতে বা পিডিএস বিলিয়ে দিতে পারব না। যত ক্ষণ, যতদিন থাকব, মানুষের বিরুদ্ধাচরণ করে ক্ষমতা চাই না। মানবিক মুখ নিয়ে আমরা রাজনীতি করি। নির্বাচনের সময় এক রকম, অন্য সময় আর এক রকম, এটা আমি করি না।’’
আরও পড়ুন: দায়িত্ব নিচ্ছে না অন্য রাজ্য, সরব মুখ্যমন্ত্রী
আরও পড়ুন: ‘অসৌজন্য’ হচ্ছে, ফের অমিত শাহকে তোপ মমতার
চলতি পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ধরনের বকেয়া-সহ প্রায় ৫৩ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রের থেকে দাবি করেছিল রাজ্য সরকার। পাশাপাশি, চলতি রেপো রেট অনুযায়ী রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে ধার নেওয়া এবং বাজার থেকে ঋণ নেওয়ার সীমা তিনের পরিবর্তে পাঁচ শতাংশ করার আর্জি জানিয়েছিল রাজ্য। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী এই দুই ক্ষেত্রেই সায় দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘‘আমরা আসলে পাব ০.৫%। ১.৫% পাব না। কতগুলো শর্ত দেওয়া হয়েছে। এর থেকে ভাল, মাথা নত না করে চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, মাথা উঁচু করে চলার।’’